ঢাকা | বঙ্গাব্দ

৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবি

দাবি দ্রুত বাস্তবায়িত না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণাও দিয়েছে রকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ
  • | ০৩ মে, ২০২৪
৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবি সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা

শিগগিরই ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ। এছাড়া আরও ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেছে সংগঠনটি। সেই দাবি দ্রুত বাস্তবায়িত না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণাও দিয়েছে তারা।


আজ শুক্রবার (৩ মে)  দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ হল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানায় সংগঠনটি।


সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি মো. আনোয়ারুল ইসলাম তোতা বলেন, আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি আমাদের এই দাবিগুলো যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না করা হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব সামনের দিনগুলোতে।  


সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক ওয়ারেছ আলী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাড়ি ভাড়া, রেশনিং পদ্ধতি চালু, চিকিৎসা ভাতা, শিক্ষা সহায়ক ভাতা, যাতায়াত ভাতা ও টিফিন ভাতাদি প্রদানের দাবিতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন। বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে আমাদের সংগঠনের ব্যানারে ২০১৯ সাল থেকে সংবাদ সম্মেলন, স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন, বিভাগীয় সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি।


তিনি বলেন, সর্বশেষ গত বছরের ২৬ মে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সে সময়ে বেতন বৃদ্ধি ও ভাতাদির অসঙ্গতি দূর করার আশ্বাসমূলক আলোচনা হয়। সে আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে মহাসমাবেশে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। কিন্তু আমাদের বেতন-ভাতাদি বৃদ্ধির সব আশাকে নিরাশায় পরিণত করে সরকার মাত্র ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা প্রদান করে। সরকারের এ ঘোষণায় প্রজাতন্ত্রের ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীরা চরমভাবে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়। সরকার কর্তৃক এ ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা বর্তমান বাজার ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।


তিনি আরও বলেন, তাছাড়াও আমাদের সংগঠনের দাবি ছিল কর্মচারী অঙ্গনে বৈষম্য দূর করা। কিন্তু তা না হয়ে ৫ ভাগ বিশেষ সুবিধায় ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বৈষম্য আরও বৃদ্ধি হয়েছে। ১১-২০ গ্রেডের অধিকাংশ কর্মচারীদের মূল বেতন ২০ টাকার নিচে, তাদের আগামী ৪/৫ বছরেও বিশেষ সুবিধা সর্বনিম্ন ১ হাজার  টাকার ঊর্ধ্বে উঠবে না। অথচ ১-৯ গ্রেডের কর্মচারীদের এ সুবিধা চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আমরা এ ধরনের বিশেষ সুবিধা চাইনি। আমরা চেয়েছি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের মূল বেতন বৃদ্ধি করা। যাতে কর্মচারীরা পরে এর সুবিধা পেতে পারে।


তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা পুনর্বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বর্তমান সময়ের মুদ্রাস্ফীতির সাথে সঙ্গতি রেখে তা মূল বেতনের সাথে সংযোজন ও সব ভাতাদি যুগোপযোগী করার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি। একইসাথে যথাশিঘ্রি বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নেরও দাবি জানাচ্ছি। কেননা দ্রব্য-মূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে পরিবারের ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার প্রাপ্ত বেতনের অর্থ দিয়ে মাসের ১৫ দিনও চলা সম্ভব হয় না।


সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি দাওয়া হলো... 


১। পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অন্তর্বর্তীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ ভাতা প্রদান করতে হবে।


২। রেশনিং পদ্ধতি চালুসহ ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।


৩। সচিবালয়ের ন্যায় সব দপ্তর, অধিদপ্তরের পদ, নাম পরিবর্তনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীত করণ এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে।


৪। টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পুনর্বহাল, বিদ্যমান গ্র্যাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্র্যাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।


৫। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অধস্তন আদালতের কর্মচারীদের বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।


৬। প্রাথমিক শিক্ষার দপ্তরি কাম প্রহরীসহ আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে। ব্লক পোস্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সব পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর বেতন ফেলের উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।


৭। বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সব ভাতাদি পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।