বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন দেশটির কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট ও নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের ২২ জন সদস্য। এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে চিঠি দিয়েছেন তারা। শুক্রবার কংগ্রেসের উভয় কক্ষের আইনপ্রণেতাদের লেখা এ চিঠি ম্যাসাচুসেটসের ডেমোক্র্যাট সিনেটর এডওয়ার্ড জে মার্কি তার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছেন। মেরিল্যান্ডের সিনেট সদস্য ক্রিস ভ্যান হোলেনও এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য।
এ চিঠি লেখায় নেতৃত্বদানকারী আইনপ্রণেতাদের মধ্যে এডওয়ার্ড জে মার্কি ছাড়াও আছেন প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট সদস্য জিম ম্যাকগভার্ন ও বিল কিটিং। চিঠিতে আরও যারা সই করেছেন— ডিক ডারবিন, টিম কেইন, ট্যামি বাল্ডউইন, জেফ মার্কলে, ক্রিস মারফি এবং প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য সেথ মুল্টন, লরি ট্রাহান, জো উইলসন, ডিনা টিটাস, গ্রেস মেং, গ্যারি কনোলি, গ্যাবি অ্যামো, আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ, ইলহান ওমর, নাডিয়া ভেল জিকুয়েজ, ড্যান কিলডি, বারবারা লি ও জেমস ময়লান।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় দেশজুড়ে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অধীন দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সংঘটিত হতে থাকার ওপরই আলোকপাত করেছে এসব ঘটনা।
আইনপ্রণেতারা লেখেন, বাংলাদেশ সরকার এমন সব পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ক্ষুণ্ন করছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে- জানুয়ারিতে ব্যাপকভাবে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের আয়োজন করা, শ্রমবিধির উন্নয়ন ঘটাতে ব্যর্থ হওয়া। এ ছাড়া আছে, অতিসম্প্রতি গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে সহিংস পন্থায় বিক্ষোভ দমন ও ইন্টারনেট পরিষেবা প্রায় পুরোপুরি বন্ধ করার ঘটনা।
অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের উদ্দেশ্যে আইনপ্রণেতারা আরও লেখেন, এ উদ্বেগজনক ও চলমান প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আশা করি, দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্কে অভিন্ন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের যে ভিত্তি রয়েছে, তা সমুন্নত রাখতে আপনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের নেতৃত্ব দেবেন। যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানাতে হবে, গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে; যেমন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার, জনগণের বিরুদ্ধে উল্লেখিত নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে পদক্ষেপ নিতে হবে। উপরন্তু বাংলাদেশে গণতন্ত্রের আরও অবনতি ঠেকাতে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে, যাতে দেশটিতে একটি প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় মানুষের অধিকারকে সমর্থন দেওয়া যায়, যে সরকার মানবাধিকার সমুন্নত রাখবে ও নাগরিকদের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে।