ইরানের সম্ভাব্য হামলার শঙ্কায় যখন ইসরায়েল তটস্থ, তখন ইরানের তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিই কেবল হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যার বদলায় ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালানো থেকে ইরানকে বিরত রাখতে পারে।
ইসরায়েল এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার বা অস্বীকার কোনওটিই করেনি। তবে ইরানের হামলার মুখে দেশটি সামরিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রেখেছে। ইরানের ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তার মধ্যে এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা ব্যর্থ হলে কিংবা ইসরায়েলকে আলোচনা থেকে বের হয়ে যেতে দেখা গেলে ইরান ও হিজবুল্লাহর মতো এর মিত্ররা সরাসরি হামলা শুরু করবে। তবে হামলা চালানোর আগে ওই যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য ইরান কতক্ষণ সময় দেবে তা বলেননি কর্মকর্তারা।
তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া এবং লেবাননের ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর কমান্ডার ফুয়াদ শুকরি হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বৃহত্তর পরিসরে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়েছে। ইরান এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে নিবিড় আলোচনাও চালাচ্ছে বলে ইরানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তুরস্কে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন যে, ওয়াশিংটন তার মিত্রদেরকে উত্তেজনা কমাতে ইরানকে রাজি করানোর অনুরোধ করছে।
তিন আঞ্চলিক সরকারি কর্মকর্তাও জানিয়েছেন, গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার আগে উত্তেজনা এড়াতে ইরানের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে। যুদ্ধবিরতি আলোচনা বৃহস্পতিবার মিশর কিংবা কাতারে হওয়ার কথা রয়েছে। জাতিসংঘের ইরানি মিশন গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, আশা করি আমাদের জবাব সময়োচিত হবে এবং এমনভাবে দেওয়া হবে যাতে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির কোনও ক্ষতি না হয়। আর গত মঙ্গলবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, সংযত থাকার আহ্বান আন্তর্জাতিক আইনের মূলমন্ত্রের সঙ্গে যায় না।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কারবি সোমবারেই সাংবাদিকদের বলেন, এ সপ্তাহেই ইরান ও এর ছায়াগোষ্ঠীগুলো কিছু একটা ঘটাতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল উভয়ের মূল্যায়নেই এমন আঁচ পাওয়া গেছে। তিনি আরো বলেন, এ সপ্তাহে কিছু ঘটলে বৃহস্পতিবার গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে যে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে তার ওপর এর প্রভাব পড়া অবশ্যম্ভাবী।
তবে আলোচনা আগাবে কিনা তা নিয়ে গত সপ্তাহন্তেই সংশয় প্রকাশ করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। কারণ, সম্প্রতি কয়েকমাস ধরে হামাস এবং ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা করলেও চূড়ান্ত কোনও চুক্তিতে উপনীত হতে পারেনি।