ঢাকা | বঙ্গাব্দ

নাইজারে মার্কিন ঘাঁটিতে রুশ সেনাদের প্রবেশ

এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, “পরিস্থিতি ভালো নয়। তবে স্বল্প সময়ে এটি ম্যানেজ করা যাবে।”
  • | ০৩ মে, ২০২৪
নাইজারে মার্কিন ঘাঁটিতে রুশ সেনাদের প্রবেশ ‘এয়ারবেজ ১০১’ বিমানঘাঁটি

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের একটি মার্কিন বিমানঘাঁটিতে প্রবেশ করেছেন রুশ সেনারা। সম্প্রতি দেশটির সামরিক জান্তা মার্কিন সেনাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। এমন প্রেক্ষাপটে মার্কিন বাহিনীর অবস্থান থাকা বিমানঘাঁটিতে রুশ সেনা প্রবেশের ঘটনা ঘটল।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। খবর রয়টার্স।

নাইজারের সামরিক জান্তা মার্চ মাসে ওয়াশিংটনকে জানিয়ে দেয়, দেশটিতে থাকা মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রায় ১ হাজার সদস্যকে অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে। ওই নির্দেশনা দেওয়ার এক মাস পর এখন নাইজারের বিমানঘাঁটিতে রুশ বাহিনী মোতায়েনের খবর এলো।

নাইজারে গত বছরের জুলাইয়ে সামরিক অভ্যুত্থান হয়। জান্তার ক্ষমতা দখলের আগে আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে আইএস ও আল-কায়েদাসংশ্লিষ্ট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর লড়াইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ছিল নাইজার। অঞ্চলটিতে এখন প্রাণঘাতী সহিংসতা বেড়ে যেতে দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন বার্তা রয়টার্স বলে, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের সঙ্গে মিশছেন না রুশ সেনারা। ১০১ নামের ওই বিমান ঘাঁটির একটি আলাদা হ্যাঙ্গারে অবস্থান নিয়েছে রুশ বাহিনী। এই ঘাঁটি নাইজারের দিওরি হামানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশেই অবস্থিত।বিমানঘাঁটিতে রুশ সেনাদের উপস্থিত রয়েছে। তবে বিমানঘাঁটিতে মুখোমুখি পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

নাইজারের রাজধানী নিয়ামির ডিওরি হামানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছেই ‘এয়ারবেজ ১০১’ নামের বিমানঘাঁটি অবস্থিত।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিন বলেন, ‘এয়ারবেজ ১০১’-এ মার্কিন বাহিনী আছে। এটি নাইজার বিমানবাহিনীর একটি ঘাঁটি। সেখানকার একটি পৃথক কম্পাউন্ডে রাশিয়ার লোকজন আছে। তবে এই মুহূর্তে তিনি সেখানে মার্কিন বাহিনীর নিরাপত্তা, সুরক্ষার ক্ষেত্রে বড় কোনো সমস্যা দেখতে পাচ্ছেন না বলেও জানান তিনি।

মার্কিন বাহিনীর ঘাঁটিতে এমন সময় রুশ সেনারা অবস্থান নিলো যখন এই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক টানাপোড়েন চলছে। বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়।

এছাড়া ওই ঘাঁটিতে যেসব মার্কিন অবকাঠামো রয়েছে সেগুলোর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, “পরিস্থিতি ভালো নয়। তবে স্বল্প সময়ে এটি ম্যানেজ করা যাবে।”

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত নাইজার এবং রুশ দূতাবাসে যোগাযোগ করে। কিন্তু কোনো দূতাবাসই এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।

নাইজারের জান্তার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কথা বলছে। এ কারণে তাদের দেশে মার্কিন সেনারা থাকতে পারবে না।

নাইজারের সেনারা অভ্যুত্থানের পরপরই প্রথমে ফ্রান্সের সেনাদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এখন তারা যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের চলে যেতে বলছে। মূলত আফ্রিকার দেশগুলো পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করছে। অপরদিকে নিরাপত্তার জন্য রাশিয়ার দারস্থ হচ্ছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান