ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আলোাচিত আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ব্যক্তি সেদিন রাতে যৌনপল্লিতে যান, এমনটাই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে ফিরে আরজি করে ঢোকেন তিনি। তার পরেই নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনার তদন্তভার এখন দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে। অভিযুক্তের গতিবিধি যাচাই করে দেখছেন গোয়েন্দারা।
কলকাতার পুলিশ আগেই জেনেছে, সেদিন রাত ১১টা নাগাদ আরজি করের সিসিটিভিতে অভিযুক্তকে দেখা গেছে। তখন তিনি হাসপাতালে ঢোকেন। তার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার বেরিয়ে যান। বাইরে কোথাও তিনি মদ খেয়েছেন বলে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। পরে আবার হাসপাতালে ফিরেন। জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হলের কাছে সিসি ক্যামেরায় তাকে দেখা যায় ভোর ৪টার দিকে। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পর সেখান থেকে আবার বেরিয়ে যান অভিযুক্ত।
সিবিআই সূত্র জানায়, রাতে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যৌনপল্লিতে যান অভিযুক্ত। তার সঙ্গে এক বন্ধুও ছিলেন। তবে যৌনপল্লিতে গিয়ে অভিযুক্ত কেবল মদ খেয়েছেন বলেই দাবি করেছেন তদন্তকারীদের কাছে। সেখান থেকে আবার আরজি করে ফেরেন তিনি। তার পরেই চার তলার সেমিনার হলে এই ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকালে সেমিনার হল থেকে নারী চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার হয়। তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। সেদিন রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ এবং সেমিনার হল থেকে উদ্ধার একটি ছেঁড়া হেডফোনের সূত্র থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ পরে জানায়, জেরায় অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত। এই ঘটনার প্রতিবাদে আরজি করসহ শহরের প্রত্যেক সরকারি হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন শুরু হয়। দোষীদের কঠোর শাস্তি এবং হাসপাতালে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলন এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১৭ আগস্ট) ভারতজুড়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন তারা। ফলে বিভিন্ন হাসপাতালে বহির্বিভাগের পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। আন্দোলন ক্রমে রাজ্য ছাড়িয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। অভিযুক্তকে তার পর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দিয়েছে পুলিশ। এই তদন্ত কোন দিকে মোড় নেয়, তা অবশ্য ভবিষ্যৎই বলে দেবে।