ঢাকা | বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে নামছে না বন্যার পানি

জেলা শহরের বাসিন্দারা পায়নি আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা। এ কারণে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে, ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কার্যক্রম।
  • | ৩১ আগস্ট, ২০২৪
নোয়াখালীতে নামছে না বন্যার পানি নোয়াখালি শহরে এখনও হাটু পানি।
নোয়াখালীর সব উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে জেলা শহরে এখনও হাটু পানি। ডুবে আছে প্রধান সড়কগুলো। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে পানিবন্দি মানুষ। মূলত খাল-নালা দখল ও দূষণে নামছে না বন্যার পানি। এছাড়া অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাকেও দায়ী করছেন বাসিন্দারা।

জানা যায়, ইসলামিয়া খাল, গাবুয়া খাল ও দত্তেরহাট খাল দিয়ে জেলার সদর উপজেলার পানি নিষ্কাশন হয়। কিন্তু এসব খাল অবৈধ দখল এবং খননে অনিয়মের কারণে বন্যার পানি নামছে না। জেলা শহরের বাসিন্দারা পায়নি আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা। এ কারণে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে, ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী, স্বজন, চিকিৎসকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য পরিকল্পিত ও আধুনিক খাল বা নালা তৈরির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ব্যবসায়ী শওকত আলী বলেন, ইসলামিয়া খাল, গাবুয়া খাল ও দত্তেরহাট খাল দিয়ে পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার কথা। কিন্তু খালগুলো ঠিকমতো খনন হয়নি। ফলে পানি নামছে না। এছাড়া খালগুলোর ওপর ব্রিজ নির্মাণ করার সময় রিং বাঁধগুলো কেটে না দেওয়ায় পানি নামছে না। ব্রিজের নিচে মাটি ভরাট হয়ে আছে। আমরা বিষয়গুলো জানালেও কেউ আমলে নিচ্ছে না। ঠিকমতো পানি নামলে আমরা এতদিন জলাবদ্ধতায় আটকে থাকতাম না।

শাকিল আহমেদ নামের জেলা শহরের এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের ড্রেনেজ ব্যবস্থা অত্যন্ত বাজে। সড়কের চেয়ে ড্রেন ওপরে। ফলে ড্রেন দিয়ে পানি নামছে না। কোথাও ড্রেন আছে, কোথাও নেই। সব কিছুই অপরিকল্পিত। যাচ্ছে তাই অবস্থা। পরিকল্পিত ব্যবস্থা নাহলে আমাদের জলাবদ্ধতা শেষ হবে না। আমরা স্থায়ীভাবে মিমাংসা চাই।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুর ইসলাম হৃদয় বলেন, খনন হলেও খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। জেড মোড় এলাকায় প্রভাবশালীরা খাল খনন করতে দেয়নি। ফলে পানি নামছে না। আমরা এসব অনিয়মের নিরসন চাই।

নোয়াখালী সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার বলেন, ব্রিজগুলোর নিচে নির্মাণের সময় দেওয়া বাধ থাকার কথা নয়। তবে যদি থাকে তাহলে আমরা তা অপসারণ করব। জলাবদ্ধতা নিরসনে সকলের সমন্বয়ে কাজ করা উচিৎ।

নোয়াখালী পৌরসভার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আরা বলেন, এটা আমাদের দীর্ঘদিনের সমস্যা। বন্যার কারণে এটা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করতে চাই। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণ সহযোগিতা করছে। এছাড়া অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে তালিকা তৈরি করে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হবে।