ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাসের মাথায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নির্বাচন কমিশনে সংবাদ সম্মেলন ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন সিইসি।
হাবিবুল আউয়াল ছাড়া বর্তমান কমিশনের বাকি চার সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান, বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমানও পদত্যাগ করছেন বলে জানান সিইসি। সংবাদ সম্মেলনে কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান ও মো. আলমগীর উপস্থিত থাকলেও বেগম রাশিদা সুলতানা ও আনিসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন না।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমিসহ নির্বাচন কমিশনের সকলেই পদত্যাগের জন্য মনস্থির করেছি। পদত্যাগের কাগজপত্র সচিবের কাছে জমা দিয়েছি। এখন তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে সেগুলো জমা দেবেন।
ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে পদত্যাগের পক্ষে ছিলেন সিইসি। কিন্তু অন্য নির্বাচন কমিশনাররা এত দিন সায় দেননি। নিজ থেকে পদত্যাগ করা ঠিক হবে না বলে সিইসিকে বোঝান তারা। এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল নির্বাচন ভবনে কমিশনাররা নিজেরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
গতকাল বিকেলে নির্বাচন ভবন থেকে বের হওয়ার সময় পদত্যাগ করছেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন কিছুই বলব না। বৃহস্পতিবার ১২টায় আপনাদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে, যা বলার সেখানে বলব।’ সিইসির এমন বক্তব্যর পরই তাদের পদত্যাগের গুঞ্জন শুরু হয়। হাবিবুল আউয়ালের এমন মন্তব্যর পরদিনই পদত্যাগের ঘোষণা এলো প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পক্ষ থেকে।
সাংবাদিকদের সামনে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার আগে বেলা ১১টায় ইসি সচিবালয়ের সব কর্মকর্তার সঙ্গে ‘সৌজন্য বিনিময়’ করে নির্বাচন কমিশন। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে এই কমিশনের পরিচালনায় ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া গত আড়াই বছরে দেড় সহস্রাধিক পদে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন, উপনির্বাচন করেছে তারা।