ঢাকা | বঙ্গাব্দ

সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে মামলা থেকে নাম বাদ

গণআন্দোলনে হতাহতের বিচার চেয়ে দেশজুড়ে যেসব মামলা হচ্ছে, সেগুলোর ধরন যেন আওয়ামী লীগ আমলের ‘গায়েবি’ মামলার মতোই।
  • | ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে মামলা থেকে নাম বাদ পুলিশ সদর দফতর।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হতাক্যাণ্ডসহ অন্যান্য ঘটনায় যেসব মামলা হচ্ছে, সেগুলোর প্রাথমিক তদন্তে কোনো আসামির সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে বলেছে পুলিশ সদর দফতর। একইসঙ্গে সঠিক তথ্যপ্রমাণ ছাড়া এসব মামলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করা যাবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দফতরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি-কনফিডেনসিয়াল) কামরুল আহসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দফতর থেকে এ চিঠি জারি করা হয়েছে। চিঠিতে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভার কার্যবিবরণীর বরাত দিয়ে বলা হয়, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ঘিরে হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য মামলায় তদন্ত ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নামও প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতে হবে।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সারাদেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে অনেক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় নাম উল্লেখ করে আসামি করা ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেও অসংখ্য আসামি করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গুলি চালাতে নির্দেশ দিয়ে হত্যা ও নির্যাতন চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে এসব মামলায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামেই ১৬৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ১৪৭টিতে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। বাকি ১৮টি মামলা হয়েছে হত্যাচেষ্টা ও অপহরণের অভিযোগে।

গণআসামি করে করা এসব মামলার বিচারের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকেরা। তারা বলছেন, জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে হতাহতের বিচার চেয়ে দেশজুড়ে যেসব মামলা হচ্ছে, সেগুলোর ধরন যেন আওয়ামী লীগ আমলের ‘গায়েবি’ মামলার মতোই। এতে করে ভুক্তভোগীর পরিবার সঠিক বিচার পাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে। যাচাই-বাছাই না করে মিথ্যা বা ভুয়া মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি না করার অনুরোধ এসেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও।