বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সরবোর্ড পুনর্গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে নতুন বোর্ডের ১৫ সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। সেই তালিকায় আছে ছোট পর্দার নির্মাতা আশফাক নিপুনের নাম। বড় পর্দার জন্য এখনও একটি সিনেমাও বানাননি নিপুন। তবে সেন্সরবোর্ডে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আশফাক নিপুন।
সমালোচনাধর্মী প্রশ্ন মাথায় নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন আশফাক নিপুন। ফেসবুকে তিনি জানিয়েছেন, সেন্সর বোর্ডে থাকছেন না এই নির্মাতা। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘সেন্সরবোর্ড আগামী কয়েক মাসের ভেতর সেন্সর সার্টিফিকেশন বোর্ডে রূপান্তরিত হবে বলে আমাকে জানিয়েছেন তথ্য মন্ত্রণালয়। আজীবন চলচ্চিত্র বা শিল্পে সেন্সর প্রথার বিরুদ্ধে। মন্ত্রণালয় আমাকে বোর্ডের সদস্য হওয়ার যোগ্য মনে করেছে, খুবই সম্মানিত বোধ করেছি। কিন্তু একটা মিস-কমিউনিকেশন হয়ে গেছে। এই বোর্ডের অফিসিয়াল সদস্যপদ গ্রহণ করিনি, বিনয়ের সঙ্গে ফিরিয়ে দিয়েছি। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা হয়ে গেছে।’
সেন্সর প্রথা বিলুপ্ত করে গ্রেডিং বা সার্টিফিকেশন করার তাগাদা দিয়ে বোর্ডসদস্যদের প্রতি শুভ কামনা জানিয়েছেন নিপুন। সে প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘সেন্সরবোর্ড বাতিলের পক্ষে আমার অবস্থান থাকবে। নবগঠিত সেন্সরবোর্ডের বাকি সদস্যরা, যারা আমার কলিগ, তাদের সেন্সরবোর্ড বাতিল করে দ্রুত সেন্সর সার্টিফিকেশন বোর্ড বা গ্রেডিং সিস্টেম চালুর পক্ষে আমার শুভকামনা রইলো।’
পুনর্গঠিত সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব ও সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান। পদাধিকারবলে সদস্য হিসেবে থাকছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি। সদস্য তালিকায় আছেন চলচ্চিত্র সমালোচক জাকির হোসেন রাজু, নির্মাতা খিজির হায়াত খান, তাসমিয়া আফরিন মৌ, রফিকুল আনোয়ার রাসেল ও অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। এ ছাড়া আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রেস সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (চলচ্চিত্র), জননিরাপত্তা বিভাগের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনও এই বোর্ডের সদস্য।
বিভিন্ন সময় সেন্সরবোর্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন নির্মাতা আশফাক নিপুন। তিনি বলেন, এটি প্রাগৈতিহাসিক প্রথা, যেটা দিয়ে সিনেমা কিংবা শিল্পচর্চাকে আটকে দেওয়া হয়। ‘শনিবার বিকেল’, ‘নমুনা’, ‘মাই বাইসাইকেল’, ‘কাঠগোলাপ’, ‘অমীমাংসিত’-এর মতো সিনেমাগুলোকে কোনো কারণ ছাড়াই আটকে দেওয়া হয়েছে। অনেক সিনেমা কাটছাঁট করা হয়। এই প্রথাই শিল্পের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। শিল্পীর কাজ হচ্ছে উন্মুক্তভাবে শিল্পচর্চা করা।’