ঢাকা | বঙ্গাব্দ

৯০০ বন্দি এখনও পলাতক: আইজি প্রিজন্স

দেশের পট পরিবর্তনের সময়কালে সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতির সাধিত হয়।
  • | ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
৯০০ বন্দি এখনও পলাতক: আইজি প্রিজন্স সংবাদ সম্মেলনে আইজি প্রিজন্স

৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন কারাগার থেকে পালিয়ে যায় বন্দিরা। এর আগে তারা বিশৃঙ্খলা-বিদ্রোহ তৈরি করে। পরে সুযোগ বুঝে হাঙ্গামার মাধ্যমে পালিয়ে যায়। এসব ঘটনার পর দুই হাজার কারাবন্দি পালিয়ে যায়। তার মধ্যে ১১০০ ফিরে আসলেও এখনও ৯০০ পলাতক রয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বকশীবাজারে অবস্থিত কারা অধিদফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।

আইজি প্রিজন্স জানান, ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুদয়ের মাধ্যমে দেশের পট পরিবর্তনের সময়কালে সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতির সাধিত হয়। বাংলাদেশের কারা অধিদপ্তরের ব্যতিক্রম ছিল না। বেশ কয়েকটি কারাগারে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এবং প্রায় দুই হাজারের অধিক বন্দি কারাগার থেকে পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন, বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পাওয়া বন্দিসহ বিচারাধীন মামলার আসামিরা আছেন। এখন পর্যন্ত ৯০০ বন্দি পলাতক রয়েছে।

এছাড়াও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে যথাযথ তদন্তপূর্বক শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণের কার্যক্রমও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এক্ষেত্রে কারা বিভাগ নিশ্চয়তা প্রদান করছে যে, এখন থেকে কারা বিভাগের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে অতিদ্রুততার সঙ্গে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, কারাগারকে সেবাগ্রহণকারীদের আস্থাভাজন হিসেবে গড়ে তোলাসহ একটি প্রকৃত সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা প্রণয়নসহ দক্ষতা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো পদায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

কয়েকটি কারাগার থেকে গোলাবারুদ লুটের ঘটনাও ঘটে এবং কয়েকটি কারাগারে বন্দি পলায়ন সময় কয়েকজন বন্দির মৃত্যুসহ অনেক কারা কর্মকর্তা এবং কারারক্ষী গুরুতর আহত হন জানিয়ে আইজি প্রিজন্স বলেন, অগ্নি সংযোগ এবং ব্যাপক ভাংচুরের ফলে দুটি কারাগারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। অনেক কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসস্থলও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক সহায়তায় কারা বিভাগ অদম্য সাহসিকতার সঙ্গে অন্যান্য কারাগারগুলো সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়।

পরবর্তীতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া অধিকাংশ বন্দিকেই কারাগারে ফেরত নিয়ে আসা সম্ভব হয়। এর মধ্যে কিছু বন্দি স্বেচ্ছায় এবং বাকিদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়। এ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে কারাগারের লুটকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদের উল্লেখযোগ্য অংশও উদ্ধার করা হয়েছে, অবশিষ্টগুলো উদ্ধারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।