বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রহুল আমিন গাজী একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘‘ আমাদের অভিভাবক প্রিয় নেতা রুহুল আমিন গাজী ভাই বেঁচে নেই। তিনি রাত ৯টায় আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেছেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহে রাজেউন।’’
মৃত্যৃকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭১ বছর।
পরিবারের সদস্যরা জানান, পান্থ পথের বিআরবি হাসপাতালে গত দুইদিন আইসিইউতে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষনে ছিলেন তিনি।
রহুল আমিন গাজী দীর্ঘদিন ধরেই কিডনি জটিলতা, উচ্চ ডায়াবেটিক, ব্যাক পেইন, লবণ ঘাটতিসসহ বিভিন্ন রোগে ভোগছিলেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রোববার রাত পৌণে তিনটায় রুহুল আমিন গাজীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে নিতে হয়রত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে গেলে ফ্লাই করার অনুমতি না পেয়ে তাকে এয়ারপোর্ট থেকে আবার ঢাকার বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার দুপুরের পর তার অবস্থা বেশ সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে।
মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রুহুল আমিন গাজীর প্রতি সাংবাদিকরা শেষ শ্রদ্ধা জানাবে ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে। সেখানে তার নামাজা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।এরপর তাকে ঢাকায় শাহজাহানপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
১৯৫৩ সালে ২২ এপ্রিল রুহুল আমিন গাজীর জন্ম চাঁদপুরের গুবিন্দিয়া গ্রামে। শিক্ষাজীবনে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর ১৯৭৪ সালে রিপোর্টার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায়। ইত্তেফাক ছেড়ে যোগ দেন দৈনিক সংগ্রামে… বিশেষ প্রতিনিধি, চিফ রিপোর্টারসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন জীবনে শেষ সময় পর্য়ন্ত।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাংবাদিক-সংবাদ কর্মীদের রুটি-রুজির আন্দোলনে রুহুল আমিন গাজী ছিলেন সবসময় সোচ্চার। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
শেখ হাসিনার সরকারের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই সাংবাদিক নেতাকে কারাবন্দি করে রাখে টানা ১৮ মাসের অধিক সময়। কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জামিন দেয়নি সরকার।
বিএনপি সমর্থিত পেশাজীবী সংগঠন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন রুহুল আমিন গাজী।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার পৃথক পৃথক বিবৃতিতে রুহুল আমিন গাজীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক এজেডএম জাহিদ হোসেন, সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত ওবায়দুর রহমান শাহীন, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বাছির জামাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ ও সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়া আলাদা আলাদাভাবে বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেছেন।
ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী সংবাদ কাভার করতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন নিউইয়র্ক অবস্থান করায় সেখান থেকে তিনি প্রয়াত নেতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।