ঢাকা | বঙ্গাব্দ

তুরস্কের বাণিজ্য বন্ধে ক্ষতির মুখে ইসরায়েল

তুরস্ক বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করার পর তেল আবিব সরকার বেশ অবাক হয়েছে। তারা ভেবেছিল তুরস্ক বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিলেও কখনো কার্যকর করবে না।
  • | ০৫ মে, ২০২৪
তুরস্কের বাণিজ্য বন্ধে ক্ষতির মুখে ইসরায়েল তুরস্কের এই সিদ্ধান্তে ইসরায়েলে মৌলিক পণ্য, খাদ্য পণ্য এবং বাড়িঘরের দাম বেড়ে যাবে

তুরস্কের সঙ্গে ইসরায়েলের বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তবে সম্প্রতি ফাটল ধরেছে সেই সম্পর্কের। গাজায় ইসরায়েলি বর্বর হামলায় মানবিক বিপর্যয়ের কারণে তেল আবিবের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত করেছে তুরস্ক। ২ মে থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করে দেশটি। ফলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে ইসরায়েল।

তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েল গাজায় নিরবচ্ছিন্ন ও পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বহাল থাকবে।

আঙ্কারার এমন সিদ্ধান্তে তেল আবিব ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ক্যালকালিস্ট। তুরস্কের বাণিজ্য বন্ধের তিন দিনের মাথায় ক্যালকালিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের এই বাণিজ্য বয়কটের প্রভাব আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পড়া শুরু হবে।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, তুরস্কের এই সিদ্ধান্তের কারণে ইসরায়েলে মৌলিক পণ্য, খাদ্য পণ্য এবং বাড়িঘরের দাম বেড়ে যাবে। গত বছর এসব খাতে আঙ্কারা ও তেল আবিবের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৭০০ কোটি ডলার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্ক বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করার পর তেল আবিব সরকার বেশ অবাক হয়েছে। তারা ভেবেছিল তুরস্ক বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিলেও কখনো কার্যকর করবে না। কিন্তু তাদের অবাক করে দিয়ে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেন।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের বিকল্প বের করতে লম্বা সময় প্রয়োজন হবে। সঙ্গে নতুন করে চুক্তিও করতে হবে। এমনকি বিকল্প কোনো দেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও পণ্যের দাম বেশিই থাকবে। এছাড়া পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির এই ভার সাধারণ ইসরায়েলিদেরই বহন করতে হবে। যারা যুদ্ধের কারণে ইতিমধ্যে আগের তুলনায় বেশি দাম দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন।

এদিকে তুরস্কের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে ইসরায়েলি নির্মাণ শিল্পের ওপর। সঙ্গে অটোমোবাইল খাতেও এটির প্রভাব পড়বে। কারণ বেশিরভাগ অটোমেকাররা জনপ্রিয় সব গাড়িগুলো তুরস্ক থেকে ইসরায়েলে নিয়ে আসে।

উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালে তুরস্ক প্রথম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু গত কয়েক দশকে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।

২০১০ সালে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামুদ্রিক অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করলে তুর্কি মালিকানাধীন একটি জাহাজে উঠে ইসরায়েলি কমান্ডোরা। সে সময় সংঘর্ষে ১০ ফিলিস্তিনপন্থী তুর্কি কর্মী নিহত হয়। এ ঘটনায় তুরস্ক ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।

২০১৬ সালে সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হলেও গাজা-ইসরায়েল সীমান্তে বিক্ষোভের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিরোধের জেরে দুই দেশ একে অপরের শীর্ষ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে।

সূত্র: আল-জাজিরা