দেশের ইলিশের বাজার এখন অস্থির। রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে এই সুস্বাদু মাছের দাম চড়া। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার অভিযানেও একই চিত্র দেখা গেছে। তারা জানায়, ভারতে ইলিশ রপ্তানির খবরে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৩,০০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয়, যদিও আগে ঘোষণা করা হয়েছিল যে রপ্তানি হবে না। এই ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রপ্তানির অনুমতি পাওয়ার পর আড়তদাররা ইলিশ মজুত করা শুরু করেছেন। কারও উদ্দেশ্য ভারতে পাঠানো, আবার কেউ সংকটের সময় বেশি দামে বিক্রি করার জন্য মজুত করছেন।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ বলেন, সামনে দুর্গাপূজা এবং আগামী মাস থেকে ২২ দিনের জন্য ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে, তাই মজুত করার প্রবণতা বাড়ছে। এতে বাজারে সরবরাহ কমে দাম বাড়ছে।
ক্রেতারা বলছেন, উচ্চমূল্যের কারণে ইলিশ এখন তাদের কাছে দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে। একজন ক্রেতা, মাজাহার, বলেন, "সরকার বলেছিল, এবার ইলিশ রফতানি হবে না। এখন দাম বাড়ছে। সাধারণ মানুষের আর ইলিশ খাওয়ার উপায় নেই।"
বাজারে ইলিশের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। খুচরা বাজারে ১.৫ কেজি ইলিশ ২,২০০-২,৩০০ টাকায়, ১ কেজি ১,৭০০-১,৮০০ টাকায়, ৮০০-৯০০ গ্রাম ১,৫০০-১,৬০০ টাকায়, এবং ৫০০-৬০০ গ্রাম ইলিশ ১,২০০-১,৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দুটি বিশেষ টিম রাজধানী কারওয়ান বাজার ও যাত্রাবাড়ি পাইকারি মাছের আড়তে অভিযান চালায়। তারা বাজারে ইলিশের বাড়তি দাম নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং বলেন, আড়তদাররা যৌক্তিক দামে মাছ বিক্রি করছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল জানান, খুচরা ব্যবসায়ীরা ইলিশ কিনে ২০০-৩০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, "মুনাফার অতি লোভের ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে ইলিশ।"
অভিযান শেষে দেখা যায়, ইলিশের দাম আবারও বাড়ছে। তিনি জানান, ব্যবসায়ীদের রশিদ সংরক্ষণ করতে হবে এবং তাদের মনোভাব পরিবর্তন করতে হবে। সরকারের জেল-জরিমানা দিয়ে এই সমস্যা সমাধান হবে না; সঠিক ব্যবস্থা নিতে হবে।