ঢাকা | বঙ্গাব্দ

চীনে গোপনে ড্রোন প্রকল্প চালু করেছে রাশিয়া

কুপোল চলতি বছরের শুরুতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে তার কাজের রূপরেখা দিয়ে যে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল তাতে এ কথা বলা হয়।
  • | ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
চীনে গোপনে ড্রোন প্রকল্প চালু করেছে রাশিয়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য দূরপাল্লার সামরিক ড্রোন উৎপাদন করতে চীনে গোপন অস্ত্র প্রকল্প চালু করেছে রাশিয়া। ইউরোপীয় গোয়েন্দা সংস্থার দুটি সূত্র এবং রয়টার্সের পর্যালোচনা করা নথি থেকে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। একটি নথিতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অস্ত্র কোম্পানি আলমাজ-আন্তে এর সহায়ক সংস্থা আইইএমজেড কুপোল স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় চীনে গার্পিয়া-৩ (জি৩) নামে একটি নতুন মডেলের ড্রোন তৈরি করেছে এবং এটির উড্ডয়ন পরীক্ষা করেছে।

কুপোল চলতি বছরের শুরুতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে তার কাজের রূপরেখা দিয়ে যে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল তাতে এ কথা বলা হয়। কুপোল পরবর্তীতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে আরও জানায়, তারা চীনের একটি কারখানায় জি৩-সহ অন্যান্য ড্রোন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। সুতরাং এই ড্রোনগুলো ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ মোতায়েন করা যেতে পারে। কুপোল, আলমাজ-আন্তে এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে কোনো সাড়া দেয়নি।

এদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়টার্সকে জানিয়েছে, তারা এ ধরনের প্রকল্প সম্পর্কে কিছু জানে না। ড্রোন, বা মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি) রফতানির ওপর তাদের কড়াকড়ি রয়েছে। লন্ডনভিত্তিক প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ’ এর রিসার্চ ফেলো ফ্যাবিয়ান হিনজ বলেন, চীন থেকে রাশিয়ায় ইউএভি সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত হলে তা হবে ভয়ানক একটি বিষয়।

তিনি রয়টার্সকে বলেন, এ পর্যন্ত চীন যা সরবরাহ করেছে সেদিকে দৃষ্টি দিলে দেখবেন, সেগুলো বেশিরভাগই ছিল দ্বৈত-ব্যবহারের পণ্য। এগুলো ছিল উপাদান, উপ-উপাদান, যা অস্ত্র তৈরির প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এতদিন পর্যন্ত এমনটিই জানা গেছে। তবে আমরা যা সত্যিই দেখিনি, অন্তত উন্মুক্ত সূত্রে- তা হচ্ছে নথিভুক্তভাবে গোটা অস্ত্র ব্যবস্থা স্থানান্তর। তারপরও ওয়াশিংটনের থিংকট্যাংক ‘দ্য সেন্টার ফর নিউ আমেরিকান সিকিউরিটি’ (সিএনএএস) গবেষক স্যামুয়েল বলেন, রাশিয়ার যুদ্ধে সহায়তা করে চীন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে নিজেকে ফেলতে চাইবে না। ফলে রাশিয়ার সামরিক ড্রোন উৎপাদনে চীন সহায়ক ভূমিকা পালন করছে সেটি নিশ্চিত হতে আরও তথ্য জানা প্রয়োজন।

তবে হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল বলেছে, চীনে রাশিয়ার ড্রোন প্রকল্প চালুর খবর পেয়ে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ প্রকল্পকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা-কবলিত রুশ ফার্মকে একটি চীনা কোম্পানির বিপজ্জনক সহায়তা দেওয়ার এক দৃষ্টান্ত হিসাবেই দেখছে তারা।

কুপোল পরবর্তীতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে আরও জানায়, তারা চীনের একটি কারখানায় জি৩-সহ অন্যান্য ড্রোন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। সুতরাং এই ড্রোনগুলো ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ মোতায়েন করা যেতে পারে। কুপোল, আলমাজ-আন্তে এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে কোনো সাড়া দেয়নি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়টার্সকে জানিয়েছে, তারা এ ধরনের প্রকল্প সম্পর্কে কিছু জানে না। ড্রোন, বা মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি) রফতানির ওপর তাদের কড়াকড়ি রয়েছে।

লন্ডনভিত্তিক প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ’ এর রিসার্চ ফেলো ফ্যাবিয়ান হিনজ বলেন, চীন থেকে রাশিয়ায় ইউএভি সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত হলে তা হবে ভয়ানক একটি বিষয়। তিনি রয়টার্সকে বলেন, এ পর্যন্ত চীন যা সরবরাহ করেছে সেদিকে দৃষ্টি দিলে দেখবেন, সেগুলো বেশিরভাগই ছিল ড্রোনের যন্ত্রাংশ।