ইসরায়েল হামাসকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করতে সমর্থ হলে ফিলিস্তিনের নতুন একটি প্রজন্ম আবারও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির রাজনৈতিক শাখার প্রধান বাসেম নাঈম। রোববার (৬ অক্টোবর) আল আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই যুদ্ধে হামাসকে যদি নির্মূল করাও হয় তাহলে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলা ৭৫ বছরের সংকট শেষ হবে না।
ঠিক এক বছর আগে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার শিকার হওয়ার পর ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র এই সংগঠনটিকে ‘নিশ্চিহ্ন করে ফেলার’ প্রতিজ্ঞা নিয়ে গাজার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাস যেন আর কোনো দিন তাদের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে না পারে সেজন্য এক বছর ধরে হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশ ইসরায়েল।
গাজায় ইসরায়েলের অভিযানের এক বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। এই সময়ের মধ্যে প্রায় ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের নৃশংস হামলায় মারা গেছেন। নিহতদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন প্রায় এক লাখ মানুষ। ইসরায়েলি হামলায় গাজার বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। যারা এখনো বেঁচে আছেন তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
গাজায় ইসরায়েলি হামলার এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগের দিন আল আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান বাসেম নাঈম বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানো ছাড়া হামাসের বিকল্প কোনো পথ ছিল না। বাসেম নাঈম বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা ছিল ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি প্রতিরক্ষা আইন। কারণ ইসরায়েল সবসময়ই কূটনৈতিক সমাধানকে পাত্তা দেয়নি।
যুদ্ধের চলমান পরিস্থিতি তুলে ধরে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান বলেন, ইসরায়েলে হামলার প্রতিবাদেই তারা গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করেছে। এটা শুধু হামাসের বিরুদ্ধে হামলা নয়। সতর্ক করে বাসেম নাঈম বলেন, হামাসকে যদি ইসরায়েল পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করতে সমর্থ হয়, তাহলে ফিলিস্তিনের নতুন একটি প্রজন্ম আবারও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। সেটা আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যেই হবে। কারণ আমরা এমন প্রজন্ম তৈরি করেছি যে তারা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করবে।
হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান বলেন, ৭ অক্টোবর জিম্মি করার পেছনে হামাসের উদ্দেশ্য ছিল ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির জন্য আলোচনা করা। ‘আমরা প্রথম দিন থেকে সমস্ত বন্দি ইসরায়েলিকে মুক্তি দিতে এবং আমাদের বন্দিদের মুক্ত করার জন্য একটি গুরুতর বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু ইসরায়েল আমাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।’ বলেন বাসেম নাঈম।
জিম্মিদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তার কাছে কোনো নির্দিষ্ট বিবরণ নেই। তবে তারা পরামর্শ দিয়েছেন যে তারা ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজার বাকি জনসংখ্যার মতোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গাজায় ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকায় হাতাশা প্রকাশ করে তিনি।