ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সতর্কতা ও করণীয়

একবার আক্রান্ত মশা অন্য ব্যক্তির শরীরে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটায়, এবং এই প্রক্রিয়ায় ডেঙ্গু ব্যাপক আকার ধারণ করে।
  • | ০৯ অক্টোবর, ২০২৪
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সতর্কতা ও করণীয় এডিস মশা।
বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বর আমাদের কাছে এক ভীতিকর রোগ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যা বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়ে। এই মৌসুমে বৃষ্টির ফলে এডিস মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ২৫ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মশার প্রজননের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। ডেঙ্গু জ্বর মূলত এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়, যা এডিস ইজিপ্টাই প্রজাতির মশার কামড়ের ফলে ঘটে।

ডেঙ্গু যেভাবে ছড়ায় :
ডেঙ্গু ভাইরাস এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। যখন কোনো ব্যক্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত মশার কামড়ে আক্রান্ত হন, তখন এই মশা অন্য ব্যক্তিকে কামড়ানোর মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে দেয়। একবার আক্রান্ত মশা অন্য ব্যক্তির শরীরে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটায়, এবং এই প্রক্রিয়ায় ডেঙ্গু ব্যাপক আকার ধারণ করে।

ডেঙ্গুর লক্ষণ ও পরিণাম :
ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ হলো উচ্চ জ্বর, যা ১০১ থেকে ১০২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে। এর সাথে শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, এবং ত্বকে লালচে দাগ হতে পারে। প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যাওয়া এবং শরীরে পানিশূন্যতা ডেঙ্গু জ্বরের আরও ভয়ানক পরিণতি হতে পারে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় :
ডেঙ্গুর হাত থেকে বাঁচতে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ঘরের আশপাশে জমে থাকা পানি পরিস্কার রাখা, মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে মশার ঘন বসতি এলাকা পরিস্কার করা, মশার কামড় থেকে রক্ষার জন্য ফুল হাতার পোশাক পরা এবং রাতে মশারি ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা এবং নিয়মিত মশারোধী ক্রিম বা স্প্রে ব্যবহার করতে হবে। যদি কোথাও পানি জমে থাকতে দেখা যায়, তাহলে তা ফেলে দিতে হবে। ঘরের বাথরুম, টব, ফুলদানি, এবং পাত্রের পানি নিয়মিত পরিবর্তন করা উচিত।

মশার বিস্তার রোধে সামাজিক উদ্যোগ :
ডেঙ্গু মশা নির্মূল করতে কেবল ব্যক্তিগত উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। এটি সামাজিকভাবে ব্যাপক উদ্যোগের মাধ্যমে রোধ করা সম্ভব। আশপাশের নির্মাণাধীন ভবন এবং পরিত্যক্ত জায়গাগুলো পরিস্কার রাখা, মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা একান্ত প্রয়োজন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে। নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি আশেপাশের পরিবেশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের দায়িত্ব।