ঢাকা | বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে আবারও ব্যর্থ সৌদি

জেনেভাভিত্তিক জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হয় নিউইয়র্কে অবস্থিত সংস্থাটির সাধারণ পরিষদের বৈঠকে।
  • | ১০ অক্টোবর, ২০২৪
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে আবারও ব্যর্থ সৌদি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে জায়গা পেতে আবারও ব্যর্থ হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। এই কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচনের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে অল্পের জন্য হেরে গেছে দেশটি। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার (৯ অক্টোবর) এই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার (৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

জেনেভাভিত্তিক জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হয় নিউইয়র্কে অবস্থিত সংস্থাটির সাধারণ পরিষদের বৈঠকে। এক গোপন ভোটের মাধ্যমে বিশ্বের প্রতিটি ভৌগোলিক অঞ্চল থেকে প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয় এর মাধ্যমে।

মূলত ৪৭ সদস্যের মধ্যে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত শূন্য পাঁচটি সদস্য দেশ নির্বাচনের জন্য ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এই অঞ্চল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সৌদি আরব। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ মার্শাল আইল্যান্ড ১২৪ ভোট পেয়ে পঞ্চম সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়। ১১৭ ভোট নিয়ে দেশটির ঠিক পরেই অবস্থান করছিল সৌদি আরব।

এই নির্বাচনে নতুন নির্বাচিত দেশগুলো হলো—গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, উত্তর মেসেডোনিয়া, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, মেক্সিকো, আইসল্যান্ড, স্পেন এবং সুইজারল্যান্ড। এ ছাড়া বেনিন, গাম্বিয়া ও কাতার দ্বিতীয় মেয়াদে আরও তিন বছরের জন্য পুনর্নির্বাচিত হয়েছে। উল্লেখ্য, কাউন্সিলের সদস্যরা পরপর দুই মেয়াদের বেশি দায়িত্ব পালন করতে পারেন না।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক ক্ষমতা নেই। তবে এই সংস্থা মানবাধিকার-সংক্রান্ত বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো নথিভুক্ত করার জন্য সদস্য দেশগুলোকে তদন্তে বাধ্য করতে পারে, যা কখনো কখনো যুদ্ধাপরাধের বিচারের ভিত্তি তৈরি করে।

সৌদি আরবের যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবকে একটি আধুনিক পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। এ লক্ষ্যে দেশটি বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করছে। এটি ‘রূপকল্প-২০৩০’ নামে পরিচিত। তবে এরপরও এখন পর্যন্ত বিশ্ব দরবারে সৌদি আরবের কঠোর ধর্মীয় বিধিনিষেধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনবিষয়ক চিত্র খুব একটা পরিবর্তিত হয়নি।

মৃত্যুদণ্ডবিরোধী মানবাধিকার সংস্থা রিপ্রাইভ বলেছে, সৌদি আরব চলতি বছর কমপক্ষে ২১২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। এর আগে দেশটি ২০২২ সালে ১৯৬ জন ও ২০২৩ সালে ১৭২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি মৃত্যুদণ্ড পদ্ধতির সংস্কারের জন্য কাজ করছে বলে জানিয়েছিলেন সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে, ২০২০ সালেও জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৪৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে জায়গা নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় সৌদি আরব। তার ঠিক চার বছর পর আবারও একই ধরনের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হলো দেশটি।