রকেট উৎক্ষেপণ প্রযুক্তিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করল স্পেসএক্স। রোববার (১৩ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত স্টারশিপের পঞ্চম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে রকেটের প্রথম ধাপের বুস্টারকে বিশাল ধাতব বাহুর সাহায্যে সফলভাবে ধরে আনতে সক্ষম হয় সংস্থাটি। স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ক একে ‘বহুগ্রহে মানব বসতি স্থাপনের পথে একটি বিশাল অগ্রগতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। খবর ডয়চে ভেলের।
এই পরীক্ষায় প্রথমবারের মতো রকেটের ৭১ মিটার দীর্ঘ বুস্টারকে মাটিতে ফিরিয়ে এনে সুরক্ষিতভাবে স্থাপিত করা হয়। স্পেসএক্সের উন্নত প্রযুক্তির ধাতব বাহুগুলো, যেগুলোকে 'চপস্টিক' নামে ডাকা হচ্ছে, সেগুলোই এই জটিল প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সম্পন্ন করে।
টেক্সাসের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে ভোরের সূর্যোদয়ের আলোয় প্রায় ১২১ মিটার দীর্ঘ স্টারশিপটি গালফ অব মেক্সিকোর দিকে যাত্রা শুরু করে। উৎক্ষেপণ সফল হওয়ার পর, মাস্ক এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘টাওয়ারটি রকেটটি ধরেছে!! বিজ্ঞানের কল্পকাহিনী, তবে কোনো কল্পনার অংশ নয়।’ তিনি আরও লেখেন, ‘আজ বহুগ্রহে জীবন স্থাপনের পথে বড় পদক্ষেপ নেওয়া হলো।’
স্পেসএক্সের অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে আরও জানানো হয়, ‘পঞ্চম পরীক্ষামূলক ফ্লাইট সফল হয়েছে! পুরো স্পেসএক্স টিমকে অভিনন্দন।’
উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তটি নিয়ে স্পেসএক্সের ড্যান হুট বলেন, ‘এ যুগেও যা দেখলাম তা যেন জাদু। এখনো কাঁপছি।’ কেট টাইস, স্পেসএক্স সদর দপ্তর থেকে যুক্ত হয়ে, দিনটিকে ‘প্রকৌশল ইতিহাসের জন্য এক স্মরণীয় দিন’ বলে মন্তব্য করেন।
স্টারশিপের এই প্রযুক্তিগত অর্জনটি স্পেসএক্সের পরিকল্পনার মূল অংশ—একটি সম্পূর্ণ পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট তৈরি করা, যা আরও বেশি পণ্য কক্ষপথে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে, নাসার জন্য চাঁদে মানুষ পাঠাতে পারবে এবং শেষ পর্যন্ত মঙ্গলে অভিযানের মিশন সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) শনিবার স্পেসএক্সকে স্টারশিপ উৎক্ষেপণের জন্য অনুমতি দেয়। এই অনুমতি নিয়ে এফএএ ও স্পেসএক্সের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে মতবিরোধ চলছিল, যা ফ্যালকন ৯ রকেটের উৎক্ষেপণ ও আর্থিক জরিমানার বিষয়ে তৈরি হয়।
২০১৭ সালে ইলন মাস্ক স্টারশিপের ধারণা প্রথমবারের মতো প্রকাশ করেন। তবে বিভিন্ন পরীক্ষার সময় স্টারশিপ একাধিকবার বিস্ফোরিত হলেও, চলতি বছরের জুন মাসে প্রথমবারের মতো সফলভাবে একটি পূর্ণ ফ্লাইট সম্পন্ন করে।