সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় রিভিউয়ের আবেদন নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এতে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা আবার সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে ফিরে এলো।
আজ রোববার (২০ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় দেন।
এ রায়ের ফলে দীর্ঘ আট বছর পর নিষ্পত্তি হলো গুরুত্বপূর্ণ এ রিভিউ আপিলের।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
গত ১৫ আগস্ট বিচারপতিদের অপসারণে সংসদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ করে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন শুনবেন বলে জানিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে রাষ্ট্রপক্ষের রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছিল। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ দিন ধার্যের আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করা হয়। ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশ হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে একটি রিট করেন। সে রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
হাইকোর্টের দেয়া ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। সে আপিলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন। বহুল আলোচিত ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে, দেশের গণতন্ত্র, রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, সুশাসন, দুর্নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। তবে আপিল বিভাগের দেয়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।