ঢাকা | বঙ্গাব্দ

জুমার দিনে সুরা কাহাফ পড়ার ফজিলত

ইসলামে শুক্রবারের দিনটি বিশেষ গুরুত্ব এবং মর্যাদা বহন করে।
  • | ০৮ নভেম্বর, ২০২৪
জুমার দিনে সুরা কাহাফ পড়ার ফজিলত সুরা কাহাফ পড়ার ফজিলত

ইসলামে শুক্রবারের দিনটি বিশেষ গুরুত্ব এবং মর্যাদা বহন করে।এই দিনটি সপ্তাহের সবচেয়ে বরকতময় দিন এবং এই দিনে সুরা কাহাফ পাঠের ফজিলতও অত্যন্ত বেশি।জুমার দিনে সুরা কাহাফ পড়ার বিশেষ ফজিলত সম্পর্কে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন হাদিসে উৎসাহিত করেছেন।


সুরা কাহাফের পরিচিতি


সুরা কাহাফ হলো কুরআনের ১৮তম সূরা।এতে মোট ১১০টি আয়াত রয়েছে, যা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। “কাহাফ” শব্দের অর্থ “গুহা”।এই সুরায় মূলত গুহায় আশ্রয় গ্রহণকারী কিছু যুবকের গল্প, হযরত মুসা (আঃ) ও খিজির (আঃ) এর ঘটনা, এবং জিলকারনাইনের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে।এই ঘটনাগুলি আমাদের ঈমান ও আমলকে শুদ্ধ করার জন্য দিকনির্দেশনা দেয়।


সুরা কাহাফ পড়ার ফজিলত


নবী করিম (সা.) বিভিন্ন হাদিসে সুরা কাহাফ পাঠের ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করেছেন।কিছু উল্লেখযোগ্য ফজিলত হলো:


১. শয়তান থেকে রক্ষা: আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুরা কাহাফ পড়বে, তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময় আল্লাহ নূর প্রদান করবেন।”(মুস্তাদরাক আল-হাকিম)


২. ফিতনা থেকে রক্ষা: মহানবী (সা.) আরও বলেন, “যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা পাবে।”(মুসলিম)


৩. আল্লাহর নূর লাভ: জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের শেষের দশ আয়াত পড়বে, তাকে দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপদ রাখা হবে।”(আহমাদ)


৪. দুনিয়া ও আখিরাতে নিরাপত্তা: আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য পরবর্তী জুমা পর্যন্ত নূর বা আলোর ব্যবস্থা করা হবে।”(তিরমিজি)


সুরা কাহাফে বর্ণিত কাহিনীগুলোর শিক্ষা


সুরা কাহাফে বর্ণিত বিভিন্ন ঘটনা আমাদের জীবনে বিভিন্ন শিক্ষার উৎস হিসেবে কাজ করে। এর কয়েকটি মূল শিক্ষা হলো:


১. আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল (আস্থা) রাখা: গুহার যুবকদের কাহিনী থেকে আমরা শিখি, আল্লাহর প্রতি অগাধ আস্থা ও তাওয়াক্কুল রাখলে তিনি আমাদের সর্বদা সঠিক পথে পরিচালিত করেন।


২. ধৈর্য ও সবরের শিক্ষা: মুসা (আ.) ও খিজির (আ.) এর কাহিনী থেকে বোঝা যায়, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার মাধ্যমে আল্লাহর নির্ধারিত ফয়সালার উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়।


৩. দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার উপায়: এই সুরার পাঠ দাজ্জালের ফিতনা থেকে আমাদের রক্ষা করার জন্য মহানবী (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন।দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে আমাদের ঈমান মজবুত করতে হবে এবং আল্লাহর ওপর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস রাখতে হবে।


কুরআন-হাদিসের দৃষ্টিতে সুরা কাহাফ পাঠের গুরুত্ব


কুরআন মাজিদে জুমার দিনকে ‘ইয়াউমুল জুমআহ’ বা ‘জুমার দিন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এই দিনের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি।জুমার দিনটিতে সুরা কাহাফের পঠনের মাধ্যমে মুসলিমদের জন্য আল্লাহর নূর লাভের ও শয়তান থেকে মুক্ত থাকার দোয়া লাভের সুযোগ থাকে।


উপসংহার


সুরা কাহাফের গুরুত্ব এবং ফজিলত বোঝার জন্য এটি শুধু পড়াই নয়, বরং এর বার্তা হৃদয়ে গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।