ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ইঞ্জিন এবং বগির মাঝে আটকে রেলকর্মীর মৃত্যু

দ্বিতীয় পয়েন্টস্‌ম্যান এবং ট্রেনের চালক বা লোকো পাইলটের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব ছিল। সেই কারণেই অমর কুমারের করুণ মৃত্যু হয়।
  • | ১০ নভেম্বর, ২০২৪
ইঞ্জিন এবং বগির মাঝে আটকে রেলকর্মীর মৃত্যু কাপলিংয়ে আটকে অমর কুমার।

ভারতের বিহারে ট্রেনের ইঞ্জিন এবং বগির মাঝে কাপলিং খুলতে গিয়ে এক রেলকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় রেলের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। দুই সহকর্মীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণেই রেলের ওই কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত রেল কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করেনি। উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


শনিবার সকালে বিহারের বেগুসরাইয়ের বারাউনি স্টেশনে ২৫ বছরের রেলকর্মী অমর কুমারের এমন মৃত্যু হয়। তিনি রেলের পয়েন্টস্‌ম্যান ছিলেন। ইঞ্জিন এবং বগির মধ্যেকার কাপলিং খোলাই ছিল তার কাজ। শনিবারও সেই কাজ করছিলেন। কিন্তু কাপলিং খোলার জন্য তিনি যখন ইঞ্জিন এবং বগির মাঝের ফাঁকা অংশে প্রবেশ করেন, সেই সময়ে ইঞ্জিনটি পিছিয়ে আসে। ফলে বগির সঙ্গে ওই রেলকর্মীর দেহ পিষে যায়। প্রাথমিকভাবে রেলের পাঁচ কর্মকর্তা এই ঘটনার পর তদন্ত করেন। তারা বলেছেন, বারাউনি স্টেশনে উপস্থিত দ্বিতীয় পয়েন্টস্‌ম্যান এবং ট্রেনের চালক বা লোকো পাইলটের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব ছিল। সেই কারণেই অমর কুমারের করুণ মৃত্যু হয়।


অমর ছাড়াও দ্বিতীয় পয়েন্টস্‌ম্যান হিসেবে ঘটনাস্থলে ছিলেন সোলেমান। তাকেই এই ঘটনার জন্য দায়ী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে। যদিও নিজের পক্ষে অন্য যুক্তি দিয়েছেন তিনি। তার ব্যাখ্যা, ট্রেনের চালক তার সম্মতিসূচক ইশারা ছাড়াই ইঞ্জিন পিছিয়ে দেন। লিখিত বিবৃতিতে সোলেমান জানিয়েছেন, তিনি এবং অমর পাওয়ার কার থেকে ইঞ্জিনটি আলাদা করেন। তার ফলে ইঞ্জিনটি সামনের দিকে কিছুটা এগিয়ে যায়। এই সময়ে কাপলিং বন্ধ করতে যান অমর। সোলেমানের দাবি, কোনো ইঙ্গিত ছাড়াই আচমকা ইঞ্জিনটি পিছিয়ে দেন ট্রেনের চালক। এ ক্ষেত্রে চালককে হাত দেখিয়ে সঠিক সময়ের জন্য ইশারা করার কথা ছিল সোলেমানের। তিনি দাবি করেছেন, তিনি চালককে হাত দেখাননি। কোনও ইশারা করেননি। তার আগেই নিজের মতো করে ইঞ্জিন পিছিয়ে আনেন চালক। তার ফলেই এই মৃত্যু।


ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেছেন রেলের কর্মকর্তারা। শনিবার সকাল ৮টা ১০ নাগাদ বারাউনি স্টেশনে ঢোকে লখনউ-বারাউনি এক্সপ্রেস। তারপর স্টেশন মাস্টার ইঞ্জিন থেকে পাওয়ার কার বিচ্ছিন্ন করার কাজ দেন অমর এবং সুলেমনকে। ৮টা ২৯ মিনিট নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। ট্রেনের ওই বগি এবং ইঞ্জিন সরিয়ে তার মাঝখান থেকে রেলকর্মীর দেহ উদ্ধার করতে করতে ১০টা ১৫ বেজে যায়। এরপর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।