অন্তর্বর্তী সরকারে নতুন নিয়োগ পাওয়া উপদেষ্টা চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিনের পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন এক আইনজীবী। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টাকে সরাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী সফিকুল ইসলাম।
নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে তাদের পদত্যাগ কার্যকরের দাবি জানানো হয়েছে এই নোটিশে। অন্যথায় তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন। এছাড়া এই আইনজীবী নিজেকে উপদেষ্টামণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানান তিনি। নোটিশে বলা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট সরকারের উপাদান বিদ্যমান এমন ব্যক্তিদের উপদেষ্টামণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা দুঃখজনক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। আমরা চাই তাদের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কলঙ্কমুক্ত ও বিতর্কিতমুক্ত হোক।
রোববার নতুন তিনজন উপদেষ্টা নিয়োগ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সরকারের নতুন উপদেষ্টা হিসেবে শপথ দেন মাহফুজ আলম, সেখ বশির উদ্দিন ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা মাহফুজ আলমকে নিয়ে কোনো বিতর্ক না উঠলেও বাকি দুজনকে নিয়ে তুমুল বিতর্ক ওঠে।
ওই দিনই ‘খুনি হাসিনার তেলবাজরাও উপদেষ্টা হচ্ছে’- বলে অভিযোগ করে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। আর সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমার চাই আপনারা অতি দ্রততম সময়ে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন এবং ছাত্র নাগরিকদের অংশীদারিত্বের বাইরে গিয়ে আপনারা যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেন তাহলে তা মেনে নেওয়া হবে না। অতিদ্রুত এই সিদ্ধান্তের নিরসন চাই।’
ফারুকীকে নিয়ে বিতর্কের কারণ হলো, ফারুকী ও তার অভিনেত্রী স্ত্রী তিশা শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেকে শেখ হাসিনার সঙ্গে অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশার হাস্যোজ্জ্বল ছবিও পোস্ট করেছেন।
সোমবার প্রথম দিন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফারুকী বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতন না হলে তিনিও জেলে থাকতেন। তিনি দাবি করেছেন, ২০১৮ সাল থেকেই বিভিন্ন সময়ে সরকারের পতনের জন্য সক্রিয় ছিলেন তিনি। ফারুকী বলেন, ‘ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান ছিল কি না, তার পুরস্কার হিসেবে এখানে দায়িত্ব পালন করতে এসেছি কি না, এসব বিষয় বড় নয়, আমার কাজ দিয়ে আমার অবস্থান বিবেচনা করতে হবে।’
অন্যদিকে সেখ বশির উদ্দিন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি সেখ আফিল উদ্দিনের ভাই ও একটি মামলার আসামি এমন তথ্যও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। তার নাম সম্বলিত মামলার কাগজের ছবি ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন যে এটি সঠিক কি না তা যাচাই করা হচ্ছে।