ঢাকা | বঙ্গাব্দ

মাংসের বদলে শুধুই ঝোল! ‘মাটন পার্টি’ হল রণক্ষেত্রে

মাংস-ঝোল গড়াগড়ি মাটিতে। সব মিলিয়ে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল মটন পার্টি। মুহূর্তে লণ্ডভণ্ড পুরো এলাকা।
  • | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪
মাংসের বদলে শুধুই ঝোল! ‘মাটন পার্টি’ হল রণক্ষেত্রে মাটন ভুনা।

দৃশ্য ১:


খাবারের টেবিলে আলোচনা চলছে ‘ধান্দা’ নিয়ে। আর তখন বড় থালায় ঠুকে ঠুকে মাংসের মজ্জা খাচ্ছেন মির্জাপুরের ডন কালীন ভাইয়ার বাবা সত্যানন্দ ত্রিপাঠি।


দৃশ্য ২:


পূর্বাঞ্চলের রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়ে বৈঠকে বসেছেন মির্জাপুর, জৌনপুর-সহ সব এলাকায় ডনেরা। রয়েছে পোলাও-মাংস নিয়ে এলাহি আয়োজন। সেখানেই পরে লেগে গেল গোলমাল।


জনপ্রিয় মির্জাপুর সিরিজের এই ২টি দৃশ্য মনে গেঁথে আছে দর্শকদের। মির্জাপুরের সঙ্গে মাটনের সম্পর্ক কিন্তু শুধুমাত্র রিলেই আর বন্দি নেই। দেখা গেল বাস্তবেও। ‘মাটন পার্টি’ নিয়ে সংঘর্ষ হয়ে গেল সেই মির্জাপুরেই। নাটকীয়তায় সিনেমার থেকে যা কোনও অংশে কম নয়।


ভাদোহীর বিজেপি সাংসদ বিনোদ বিন্দ ‘মাটন পার্টি’র আয়োজন করেন মির্জাপুরের পার্টি অফিসে। আমন্ত্রিত ছিলেন ২৫০-৩০০ জন। কিন্তু খাওয়া-দাওয়া চলার মাঝেই শুরু হয় তুমুল মারামারি। কী কারণ? অতিথিরা নাকি পাতে মাংসের টুকরো পায়নি। তার বদলে পাতে পড়েছে শুধুমাত্র ঝোল। তা দেখেই চরমে ওঠে ঝামেলা। কেন মাটনের টুকরো নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাণ্ডব শুরু হয় ওই এলাকায়। শুরু হল ব্যপক মারামারি। মাংস-ঝোল গড়াগড়ি মাটিতে। সব মিলিয়ে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল মটন পার্টি। মুহূর্তে লণ্ডভণ্ড পুরো এলাকা। কারও মাথায় চোট লেগেছে, কারও আবার পালাতে গিয়ে চোট লেগেছে হাতে-পায়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, তুমুল হইচই হচ্ছে সেখানে।


কিন্তু এই ভোজ কেন? ঝামেলাই বা হয়েছে কেন?


সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ২০ নভেম্বর মির্জাপুরের মাজওয়ান আসনে উপনির্বাচন আছে। সেখানে বিন্দ সম্প্রদায়ের সবাইকে একত্র করে ভোটের বাক্সে আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তা করতেই গিয়েই যত গন্ডগোল। বৃহস্পতিবার রাতে ভদোহির মির্জাপুরে নিজের দলীয় কার্যালয়ে খাসির মাংস খাওয়ানোর উদ্যোগ নেন এলাকার বিজেপি সাংসদ বিনোদ বিন্দ। আশেপাশের গ্রাম থেকে অন্তত ২৫০ জন মানুষ খেতে আসেন সাংসদের ডাকে। শুরু থেকে সব ঠিকঠাকই ছিল। দলীয় কার্যালয়ের সামনে বসে চলছিল মাংস ও রুটি খাওয়া-দাওয়া। এরই মাঝে হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হন সাংসদের গাড়ি চালকের ভাই। এর পরই বাধে বিপত্তি।


সাংসদের গাড়ি চালকের ভাই যখন খাবার পরিবেশন করছিলেন তখন এক যুবকের পাতে মাংসের বদলে শুধু ঝোল দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এই নিয়েই শুরু হয় বচসা। মুহূর্তে তা হাতাহাতির আকার নেয়। দুপক্ষের বেশ কয়েকজন মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। দেদার চলতে থাকে লাথি-ঘুষি। যে মাংস নিয়ে বচসা সেই মাংস, ঝোল সব উলটে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পালিয়ে যান গ্রামবাসীরা। মারামারিতে আহত হন বেশ কয়েকজন।


অভিযোগ, যতজন নিমন্ত্রিত ছিলেন, তার চেয়ে অনেক কম আয়োজন করা হয়। তার ফলেই মাংসে টান পড়ে। সাংসদ বিনোদ বিন্দের অফিস থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, বিরোধীদের ষড়যন্ত্রের কারণে ঝামেলা হয়েছে। অন্য লোকেরাও ভোজে পৌঁছে যাওয়ায় সমস্যা হয়। মারামারি প্রসঙ্গে সাংসদ কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা উমাশঙ্কর বিন্দের দাবি, এই খাওয়া দাওয়ার অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন যুবক মদ্যপান করে আসেন। তারাই এখানে এসে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করে। যদিও শেষ পর্যন্ত তাদের এখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।