জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ৩০০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার অঙ্গীকার করেছে ধনী দেশগুলো। জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও প্রতিরোধে সহায়তার জন্য এ সহায়তা দেয়া হবে। আজারবাইজানে ওই সম্মেলন সমঝোতার জন্য অতিরিক্ত ৩৩ ঘণ্টা সময় লেগেছে। শেষ পর্যন্ত লম্বা সময় আলোচনার পর দেশগুলো এ বিষয়ে একমত হতে পারলো। খবর বিবিসির।
জাতিসংঘ জলবায়ু সংস্থার প্রধান সাইমন স্টেইল বলেছেন, এটা ছিল কঠিন যাত্রা কিন্তু আমরা চুক্তিটি করতে পেরেছি। যদিও জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার জন্য দেশসমূহের প্রতি যে আহবান গত বছর করা হয় সে বিষয়ে কোনও চুক্তি এবারের সম্মেলনে করা যায়নি। ছোট ছোট দ্বীপ রাজ্যগুলোর যে জোট তার প্রধান সেডিরক সুসটার বলেন, এটা বাড়িয়ে বলছি না যে আমাদের দ্বীপগুলো ডুবে যাচ্ছে।একটা দুর্বল চুক্তি নিয়ে আমরা আমাদের নারী, পুরুষ ও শিশুদের কাছে ফেরত যাবো এটা আপনারা প্রত্যাশা করেন কী করে।
রোববার শেষ পর্যন্ত কিছু পরিবর্তন এনে চুক্তিটি চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করে। এ সময় করতালি ও উল্লাস করেন অনেকে। তবে ভারতীয়দের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখে বোঝা যাচ্ছিলো গভীর হতাশা থেকেই গেছে। এরপর সুইজারল্যান্ড, মালদ্বীপ, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ কিছু দেশ প্রতিবাদ জানায়। তারা বলছে জীবাশ্ম জ্বালানির বৈশ্বিক ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য চুক্তিতে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তা খুবই দুর্বল।
তবে আরও অর্থের অঙ্গীকার মানে হলো, দরিদ্র দেশগুলো যে জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যায্য বোঝা বহন করে চলেছে তার প্রতি একটি স্বীকৃতি। জলবায়ু সংকটের পেছনে এসব দেশের অবদান তুলনামূলক অনেক কম, কিন্তু তারাও এর শিকার হচ্ছে। নতুন করে এবার যে অর্থের প্রতিশ্রুতি এসেছে সেটি আসবে সরকারি মঞ্জুরি ও ব্যাংক -ব্যবসার মতো বেসরকারি খাত থেকে। তবে দেশগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যেতে আরও সহায়তা করা দরকার।
তিনশ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি দেশগুলো একমত হয়েছে যে জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অন্তত ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার দরকার। চলতি বছরও গরম আবহাওয়ার রেকর্ড হতে যাচ্ছে। সঙ্গে নিয়মিতই দেখা গেছে দাবদাহ ও প্রাণঘাতী ঝড়।
এবারের আলোচনার শুরুতে ১১ নভেম্বর বেশি কথা হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচন নিয়ে। তিনি জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিবেন। তিনি জলবায়ু নিয়ে সন্দেহবাদী মানুষ, যিনি যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস চুক্তি থেকে সরিয়ে নিবেন বলেছেন। ২০১৫ সালের ওই চুক্তি জলবায়ু সংকট মোকাবেলার ক্ষেত্রে দেশগুলোকে একটি পথনকশা দেয়।