শীতের আগমনে ঠাণ্ডা-সর্দি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও সঠিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে তা সহজেই এড়ানো সম্ভব।বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, কিছু অভ্যাস ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে শীতে সুস্থ থাকা যায়।নিচে এ বিষয়ে বিস্তারিত দেওয়া হলো।
১. সঠিক পোশাক নির্বাচন: ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা পেতে উষ্ণ পোশাক পরা অত্যন্ত জরুরি। হালকা সোয়েটার, জ্যাকেট, মোজা এবং মাথা ঢাকার জন্য টুপি ব্যবহার করতে হবে। গরম কাপড় শরীরকে তাপ ধরে রাখতে সহায়তা করে।
২. পরিমিত পানি পান: শীতে তৃষ্ণা কম লাগলেও শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। পানির পাশাপাশি হারবাল চা, গরম লেবুর শরবত এবং মধু মিশ্রিত গরম পানিও উপকারী।
৩. পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ: ঠাণ্ডা-সর্দি প্রতিরোধে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল ও শাকসবজি, যেমন কমলা, লেবু, পেয়ারা, ব্রকোলি ও পালংশাক খেতে হবে। এ ছাড়া আদা, রসুন, এবং হলুদের মতো প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৪. পর্যাপ্ত বিশ্রাম: শীতে ঠাণ্ডা-সর্দি এড়াতে পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম শরীরকে সুস্থ রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৫. হাত ধোয়া ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা: ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া প্রয়োজন। বাইরে থেকে এসে বা খাবার আগে হাত ধোয়ার অভ্যাস সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৬. ধুলা ও দূষণ এড়ানো: শীতকালে ধুলা ও বায়ুদূষণ ঠাণ্ডা-সর্দি বাড়িয়ে দিতে পারে। বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত এবং ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৭. শারীরিক ব্যায়াম: শীতে সক্রিয় থাকার জন্য হালকা ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করা যেতে পারে। এটি শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
যদি ঠাণ্ডা-সর্দি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা গুরুতর কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তবে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। নিজে থেকে ওষুধ গ্রহণ না করে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও সঠিক চিকিৎসা নেওয়া উচিত। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রুবিনা সুলতানা বলেন, "শীতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা খুবই জরুরি। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার এবং পর্যাপ্ত পানি পান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।" অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিজানুর রহমান বলেন, "শীতকালে মাস্ক ব্যবহারে ঠাণ্ডা ও দূষণ থেকে সুরক্ষা পাওয়া সম্ভব।"