দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে দেশের শীর্ষ ধর্মীয় নেতারা অংশ নেন। আলোচনায় দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার করা হয়।
সংলাপে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা ভিন্ন মত ও ধর্ম নিয়ে বাস করলেও সবাই এক দেশের সন্তান। জাতীয়তার প্রশ্নে আমরা কেউ কারও প্রতিপক্ষ নই। সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ড. ইউনূস অভিযোগ করেন, বিদেশি কিছু গণমাধ্যম বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে। তিনি উপস্থিত ধর্মীয় নেতাদের কাছে সঠিক তথ্য চেয়ে বলেন, কেউ অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ভ্রান্ত প্রচারণা রুখতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বৈঠকে বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রায় ৫০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতারা তাদের বক্তব্যে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রশংসা করেন।
ইসলামী চিন্তাবিদ শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে বিশ্বে অনন্য উদাহরণ। আমরা কোনো প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত হব না।
হিন্দু ধর্মীয় নেতা অবিনাশ মিত্র জানান, কিছু মহল ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সেন্ট মেরীজ ক্যাথিড্রালের ফাদার আলবার্ট রোজারিও বলেন, বিশ্বে বিভিন্ন অস্থিরতার মধ্যে থেকেও বাংলাদেশের মানুষ যে ধৈর্যশীলতা দেখিয়েছে, তা আমাদের গর্বিত করে।
বৌদ্ধ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় বলেন, আমরা ভালো আছি। বিদেশি অপপ্রচারে কান না দিয়ে সম্প্রীতির ঐতিহ্য বজায় রাখতে হবে। গারো পুরোহিত জনসন মৃ কামাল বলেন, দেশের অভ্যন্তরে ঐক্য ধরে রাখতে হবে এবং যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের প্রতিহত করতে হবে।
বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া দেশের সম্প্রীতি তুলে ধরতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, বিশ্ববাসীকে দেখাতে হবে যে বাংলাদেশ শান্তি ও সম্প্রীতির দেশ।
সরকারি উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, যেখানে অন্যায় বা নির্যাতনের ঘটনা ঘটবে, সেখানে সরকার তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে। বাংলাদেশ সবার জন্য নিরাপদ।
thebgbd.com/NIT