সালাম শুধু মুসলমানদের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যম নয়, বরং এটি একটি ইবাদত, যা পরস্পরের মধ্যে সৌহার্দ্য ও শান্তি স্থাপন করে। কোরআন ও হাদিসে সালামের গুরুত্ব, এর সওয়াব এবং এর পদ্ধতি নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে।
কোরআনের আলোকে আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের মধ্যে সালামের প্রচলনকে উৎসাহিত করেছেন এবং এটি রক্ষার জন্য বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন।
কোরআনে বলা হয়েছে, তোমরা যখন কোনো ঘরে প্রবেশ করো, তখন নিজের প্রতি শান্তি বর্ষণের জন্য সালাম করো। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বরকতময় এবং সুন্দর দোয়া। — (সুরা আন-নূর: ৬১)
সালামের প্রতি উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। কোরআনে বলা হয়েছে, যখন তোমাদেরকে কোনো সালাম জানানো হয়, তখন তার চেয়ে উত্তম বা অনুরূপ সালাম প্রার্থনা করো। — (সুরা আন-নিসা: ৮৬)
সালামের গুরুত্ব: হাদিসের আলোকে রাসুলুল্লাহ (সা.) সালামের ব্যাপারে জোর দিয়েছেন এবং এর প্রচলনকে ঈমানের নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সালামের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ করার সুযোগ আছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা ঈমান আনো। আর তোমরা ঈমান আনতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসো। আমি কি তোমাদের এমন কিছু শেখাব না, যা করলে তোমরা একে অপরকে ভালোবাসবে? পরস্পরের মধ্যে সালাম ছড়িয়ে দাও। — (সহিহ মুসলিম: ৫৪)
সালামের সওয়াব নিয়ে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রথম সালাম দেয়, সে অহংকার মুক্ত এবং সবার আগে সওয়াব লাভ করে। — (তিরমিজি: ২৬৯৪)
সালামের উত্তম পদ্ধতি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সর্বোত্তম সালাম হলো ‘আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ’। — (আবু দাউদ: ৫১৯৫)
সালাম শুধু একটি কথোপকথনের সূচনা নয়, এটি মুসলিম সমাজের ঐক্য ও সংহতির প্রতীক। এটি আল্লাহর কাছে প্রিয় একটি আমল, যা একজন মুমিনকে পরকালীন সওয়াব অর্জনের পথ দেখায়। তাই প্রতিদিন জীবনের প্রতিটি স্তরে সালামের প্রচলন করা উচিত, যা আমাদের পার্থিব ও আধ্যাত্মিক জীবনে বরকত ও শান্তি নিয়ে আসবে।
thebgbd.com/AR