শীতকাল শিশুদের জন্য আনন্দের হলেও, তাপমাত্রার পরিবর্তন ও শীতের শুষ্ক আবহাওয়া তাদের স্বাস্থ্যের জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে।এই সময়ে সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে শিশুদের সুস্থ রাখতে নিম্নলিখিত দিকগুলোতে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
১. ত্বকের যত্ন: শীতকালে শিশুদের ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। শীতের শুষ্ক আবহাওয়া ও ঠান্ডা বাতাস ত্বকের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ত্বকে শিশুর জন্য উপযোগী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। গোসলের পরপরই ত্বকে তেল বা লোশন লাগিয়ে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখুন। শিশুর ঠোঁট শুষ্ক হয়ে গেলে ভ্যাসলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন।
২. সঠিক পোশাক নির্বাচন: শীতের তীব্রতা থেকে শিশুকে রক্ষা করতে সঠিক পোশাক বেছে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সুতির পোশাকের উপর গরম কাপড় পরিয়ে শিশুকে স্তরে স্তরে কাপড় পরান। হাতমোজা, কানঢাকা টুপি, এবং মোজা পরিয়ে শিশুকে পুরোপুরি ঢেকে রাখুন। খুব বেশি ভারী কাপড় পরানোর প্রয়োজন নেই। শিশুকে স্বাচ্ছন্দ্যে রাখুন।
৩. সুষম খাদ্য ও হাইড্রেশন: শীতকালে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাদ্যের বিকল্প নেই। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: বাচ্চার খাদ্যতালিকায় শীতের সবজি যেমন গাজর, পালংশাক, মুলা অন্তর্ভুক্ত করুন। ফলমূল, বিশেষত কমলা, পেয়ারা এবং তাজা ফলের রস দিতে পারেন। শিশুকে পর্যাপ্ত পানি পান করান। শীতকালে পানি কম পান করার প্রবণতা দেখা দেয়, যা শরীরে ডিহাইড্রেশনের কারণ হতে পারে।
৪. শীতকালীন সর্দি-কাশি ও ঠান্ডা প্রতিরোধ: শীতকালে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেশি থাকে। এ বিষয়ে পরামর্শ হলো শিশুকে বাইরের ঠান্ডা বাতাসে বেশি সময় রাখবেন না। ঘর উষ্ণ রাখার জন্য হিটার ব্যবহার করলে আর্দ্রতা বজায় রাখতে একটি পাত্রে পানি রাখুন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার দিন।
৫. সঠিক পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি: শীতকালে বাচ্চারা সাধারণত কম গোসল করে। কিন্তু পরিচ্ছন্ন থাকা জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলেন, শিশুকে কুসুম গরম পানিতে গোসল করান। প্রতিদিন পরিষ্কার কাপড় পরাতে ভুলবেন না। হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন, বিশেষত খাবার আগে এবং বাইরে থেকে ফেরার পর।
শীতকালে শিশুদের সুস্থ রাখতে তাদের খাবার, পোশাক এবং দৈনন্দিন অভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের দেওয়া পরামর্শগুলো অনুসরণ করলে শিশুদের শীতকালীন সমস্যা এড়ানো সম্ভব।