ঢাকা | বঙ্গাব্দ

এমন আগ্রাসী বাংলাদেশকেই দেখতে চাই বারবার

বাংলাদেশের ক্রিকেটের যে অর্জন রয়েছে, তার অধিকাংশ জায়গা জুড়ে রয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের নাম।
  • অনলাইন ডেস্ক | ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
এমন আগ্রাসী বাংলাদেশকেই দেখতে চাই বারবার ছবি : সংগৃহীত।

বাংলাদেশের ক্রিকেটের যে অর্জন রয়েছে, তার অধিকাংশ জায়গা জুড়ে রয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের নাম। বিশ্বকাপ থেকে এশিয়া কাপ, সবই এসেছে তাদের হাত ধরে। গতকাল আরও একবার এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছেন বাংলাদেশের যুবারা। এ যাত্রায় তারা হারিয়েছে ভারতকে। এই ভারতকেই হারিয়ে ২০২০ সালে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে দলটিকে শিরোপা বঞ্চিত করল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। 


যেখানে ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়েসহ উদ্যাপনেও ছিল আগ্রাসী মনোভাব। এমন আগ্রাসন বাংলাদেশের জার্সিতে বারবার ফিরিয়ে আনছেন যুবারা। সাফল্য অর্জনের জন্য তার বিকল্প যে নেই, সেটিই যেন তারা আরও একবার স্মরণ করিয়ে দিলেন।বি ভিন্ন কারণে বাংলাদেশ-ভারত রয়েছে আলোচনার তুঙ্গে। সেই মুহূর্তে এশিয়া কাপের ফাইনাল যেন লড়াইয়ের রণক্ষেত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল।


সেখানে যেন সুন্দরবনের রয়‍্যাল বেঙ্গল টাইগার রূপে ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ভারতের অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান ও বাংলাদেশের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিমের মধ্যকার উত্তেজনা লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের আরও আগ্রাসী হয়ে উঠতে সহায়তা করে। শেষ পর্যন্ত সেই দাপট ধরে রেখে শিরোপা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। তাতে স্টেডিয়ামে আসা ভারতীয় সমর্থকেরা যেন মুখ লুকানোর জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না।


১৯৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত ধাক্কা খেয়েছে শুরু থেকেই। দলীয় রান যখন ৪, তখন ওপেনার আয়ুশ মাহত্রেকে বোল্ড করে উল্লাসের শুরুটা করেন পেসার আল ফাহাদ। এরপর আরেক ওপেনার বৈভব সূর্যবংশীকে আউট করার পর সাজঘরের রাস্তাটা দেখিয়ে দেন মারুফ মৃধা। সেই থেকে শুরু হয় বাংলাদেশের আগ্রাসন। এরপর একের পর এক এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করে আফগান আম্পায়ার ফারুক খান ও শ্রীলঙ্কান রবীন্দ্র কোত্তাহচ্চির সাড়া পাচ্ছিলেন না, তখন সেই আগ্রাসনে যুক্ত হয় ভিন্ন মাত্রা। যেটিকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তোলেন পেসাররা। যখনই কেউ থিতু হওয়ার চেষ্টা করেছেন তখনই উইকেট তুলে নিয়েছেন ইকবাল হোসেন ইমনরা।


ভারতের অধিনায়ক আমানের সঙ্গে যখন বাংলাদেশের ফিন্ডারদের কথা কাটাকাটি হয়, তখন যেন লড়াইয়ের নেশা আরও প্রবল হয়ে ওঠে। আমান চেষ্টা করেছেন দলকে টেনে তোলার। কিন্তু সেখানে ত্রাণকর্তা হিসেবে হাজির হয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক তামিম। অলরাউন্ডার দেবাশীষ সরকার দেবা ফিল্ডিং করে বল ছুড়েও মেরেছেন ভারতীয় ব্যাটারদের পাশ দিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে। যখনই বোলাররা উইকেট তুলে নিচ্ছিলেন তখনই কোচ নাভিদ নেওয়াজ ও তালহা জুবায়ের একে অন্যকে জড়িয়ে ধরছিলেন, উল্লাস করছিলেন। 


ক্যাচ ফেলে দেওয়া কিংবা রান আউটের সুযোগ নষ্ট হলে প্রধান কোচ নাভিদ ভুগেছেন আফসোসে। ক্যামেরায় বারবার সেই দৃশ্য তুলে ধরা হচ্ছিল। ম্যাচ থেকে কিছুটা পিছিয়ে পড়ার মুহূর্তে তালহা জুবায়ের বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে বোলারদের টিপস দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত সেটি কাজেও লেগেছে বাংলাদেশের।


শেষ দিকে ২৪ রান করা হার্দিক রাজকে যখন এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার, তখন মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি চেতন শর্মা। তার দল হেরে যাচ্ছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আগ্রাসনের কোনো জবাব দেওয়া হলো না, এমন মুহূর্তে মেজাজ ধরে রাখাটাই কঠিন। হাওয়ায় হাত ছুড়ে চেতন যেন আম্পায়ের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করলেন। কিন্তু সেটি করে আর কী হবে, ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে তখন বাংলাদেশের যুবারা। কফিনের শেষ পেরেক ঠোকার অংশ হিসেবে চেতনকে আউট করেন অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম। তারপর বাংলাদেশের হাতে ওঠে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের দ্বিতীয় শিরোপা। এমন অর্জনকে শুভেচ্ছায় সিক্ত করেছেন জাতীয় দলের সব তারকা ক্রিকেটার।


thebgbd.com/NA