চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির বিবদমান দুই গ্রুপের মারামারি ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা করা হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী ও সেকেন্ড অফিসার মো. আলমগীর।
রবিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার ও কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর দুই অনুসারী মামলা দুটি করেন।
গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীদের মামলার বাদী ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ রিজওয়ান হোসেন।
আর গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের মামলার বাদী যুবদল নেতা সাইফুদ্দিন রিবন। গোলাম আকবর খোন্দকার পক্ষের মামলায় ৩১ জন এবং আরো ৩৯-৪০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসমি করা হয়েছে। প্রধান আসামি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাবের সুলতান কাজল, দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে মোহাম্মদ রেওয়াজকে।
গোলাম আকবর খোন্দকার পক্ষের মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, শুক্রবার বিকেলে উপজেলা ও পৌর বিএনপি শাখার উদ্যোগে বিজয় মেলা উদযাপনের অনুমতির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
এ সময় পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক প্রতিপক্ষের মামলার এজাহারে উল্লিখিত ব্যক্তিরা হামলা করলে প্রায় ৮-১০ জন আহত হন।
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান মো. জসিমকে। এ ছাড়া পৌর বিএনপির নেতা আবু মোহাম্মদসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় আরো কিছু আসামি করা হয়েছে।
সাইফুদ্দিন রিবন বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ রাউজানে অশান্তি সৃষ্টি লক্ষ্যে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আহত করেছে।’
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের মামলার প্রধান আসামি গোলাম আকবর সমর্থিত উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান মো. জসিম বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য ১৭ বছর আওয়ামী লীগ আমলে নির্যাতন সহ্য করেছি। এখনো সহ্য করতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বিএনপির অনুমোদিত বৈধ কমিটি উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম আকবর খোন্দকার। উত্তর জেলা বিএনপি রাউজানে যে কমিটি অনুমোদন দিয়েছে, তাদের কার্যক্রমে হামলা এবং বাধা দেওয়া অসাংগঠনিক ও অগণতান্ত্রিক।'
গোলাম আকবর খোন্দকার অনুসারীদের মামলায় প্রধান আসামি গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী গ্রুপ সমর্থিত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাবের সুলতান কাজল বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে আওয়ামী লীগকে রাউজানে পুনর্বাসনে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমাকে এবং আমাদের সংগঠনের লোকজনকে মামলা দেওয়া হয়েছে। যারা এটি করছে তাদের রাউজানে রাজনৈতিক ভিত্তি নেই। কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ।’
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, দুই পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে দুটি এজাহার দেওয়ায় তা রবিবার রাতে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
৬ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে রাউজান বিএনপির দুই গ্রুপ বিভিন্ন স্থানে বারবার পাল্টাপাল্টি অবস্থান ও মিছিল করে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ও হাতাহাতিতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১১ জন আহত হন বলে দুই পক্ষই দাবি করে। এ নিয়ে রাউজানে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা এখনো রয়েছে।
thebgbd.com/NIT