ঢাকা | বঙ্গাব্দ

গর্ভাবস্থায় মাছ খাওয়া কেন জরুরি?

গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্যাভ্যাস সন্তানের সুস্থতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।
  • | ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
গর্ভাবস্থায় মাছ খাওয়া কেন জরুরি? গর্ভবতী নারী মাছ খেলে শিশুর মস্তিষ্ক দ্রুত বিকশিত হয়

গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্যাভ্যাস সন্তানের সুস্থতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে মাছ গর্ভবতীদের জন্য একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। এতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, এবং ভিটামিন সমূহ শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ও মায়ের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা গর্ভাবস্থায় মাছ খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন।


গর্ভবতীদের জন্য মাছ খাওয়ার উপকারিতা


১. শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক: মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের চমৎকার উৎস, বিশেষত ডোকোসাহেক্সেনোইক অ্যাসিড (DHA)। ডিএইচএ শিশুর মস্তিষ্ক ও চোখের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিবিদদের মতে, গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত ওমেগা-৩ গ্রহণ শিশুর আইকিউ উন্নত করতে পারে।


২. প্রোটিনের উৎস: মাছ উচ্চমানের প্রোটিন সরবরাহ করে, যা মায়ের শরীরের কোষ গঠনে এবং শিশুর বৃদ্ধিতে সহায়ক।


৩. ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম সরবরাহ: মাছ ভিটামিন ডি-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস, যা হাড় ও দাঁতের গঠন শক্তিশালী করে। গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম সরবরাহে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


৪. অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ: মাছে থাকা আয়রন এবং ভিটামিন বি১২ রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া) প্রতিরোধ করে, যা গর্ভাবস্থায় মায়ের জন্য সাধারণ একটি সমস্যা।


৫. প্রাকৃতিক চর্বি ও ওজন নিয়ন্ত্রণ: মাছের স্বাস্থ্যকর চর্বি গর্ভবতীদের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমায়।


প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডা. রাশিদা খানম বলেছেন, মাছ গর্ভবতীদের জন্য একটি নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ২-৩ বার মাছ খাওয়া উচিত, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ। তবে পারদযুক্ত মাছ এড়িয়ে চলা ভালো।


পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনের এ নিয়ে ব্যাখ্যা, ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছ শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি নদীর মাছও উপকারী।


গর্ভবতীদের জন্য নিম্নলিখিত মাছগুলো বেশি পুষ্টিকর:


স্যামন


সার্ডিন


ম্যাকারেল (কম পারদযুক্ত)


ইলিশ


পাঙ্গাস (কম মাত্রার চর্বিযুক্ত মাছ)


গর্ভবতীদের জন্য মাছ একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর খাবার। তবে মাছ নির্বাচন এবং সঠিকভাবে রান্নার বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় মা যদি সঠিক পুষ্টি গ্রহণ করেন, তাহলে শিশুর ভবিষ্যৎ সুস্থতা ও মানসিক বিকাশে তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।