ঢাকা | বঙ্গাব্দ

দ. কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সামরিক আইন প্রত্যাহার করলেও বিপদ কাটছে না দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের।
  • অনলাইন ডেস্ক | ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪
দ. কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল।

ক্রমেই আরও বিপদ বাড়ছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের। এ বার দেশের আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দেশ ছাড়তে পারবেন না তিনি। তার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্তও! বিরোধীদের অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করছে পুলিশ। সুক ইওলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সামরিক আইন ঘোষণার ফলে দেশে বিক্ষোভের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সংঘাত এড়াতে সিওল প্রদেশে সেনাও নামাতে হন।


মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় ইওল জানান, তিনি সারা দেশে সামরিক আইন বলবৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেন এমন সিদ্ধান্ত, তার ব্যাখ্যাও করেন ইওল। তিনি জানান, উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উনের মদতে ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনা করছে বিরোধীরা। তার ব্যাখ্যা, দেশকে কমিউনিস্ট আগ্রাসন থেকে সুরক্ষা দিতে এবং রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি নির্মূল করতে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করছেন। আর সামরিক আইন বাস্তবায়িত করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল পার্ক আন-সু-কে। সামরিক আইন জারির মধ্যে দিয়ে মূলত দেশে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ইওল।


প্রেসিডেন্টের ভাষণের পরই দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বত্র শুরু হয় বিক্ষোভ। বিরোধীরা তো বটেই, শাসকদলের অনেকেই সামরিক আইনের বিরুদ্ধে পথে নামেন। সে দেশের সংসদেরর বিরোধী সদস্যেরা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভবনে বিক্ষোভ শুরু করেন। হাজার হাজার মানুষের জমায়েতে অশান্ত হয়ে ওঠে অ্যাসেম্বলি ভবন চত্বর। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ। পরে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ দিকে গড়ায় বাধ্য হয়েই সামরিক আইন প্রত্যাহার করেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট।


সামরিক আইন প্রত্যাহার করলেও বিপদ কাটছে না ইওলের। বিরোধী শিবির তার বরখাস্তের (ইমপিচমেন্ট) দাবি তোলে। তবে শনিবার দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বেলিতে বিরোধীদের আনা সেই বরখাস্ত প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। ভোটাভুটিতে অংশ নেননি শাসক দল পিপ্‌লস পাওয়ার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্যেরা। তবে তাতেও পিছু হটছেন না বিরোধীরা। চলতি সপ্তাহে আবারও প্রেসিডেন্টকে বরখাস্তের প্রস্তাব পার্লামেন্টে উত্থাপন করতে পারেন তারা।


সেই আবহে এ বার ইওলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করছে সে দেশের পুলিশ। সোমবার স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইওলের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখে তাকে দেশ না ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ইওলের সামরিক আইন জারির ঘোষণাকে ‘অসাংবিধানিক, অবৈধ’ বলে অভিহিত করেছে। সামরিক আইন ঘোষণার ফলে সৃষ্টি হওয়া বিদ্রোহের কারণে ইওল-সহ মোট নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরও করেছে বিরোধী দলগুলো।