বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর বেশ কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসায়, কেউ বিনিয়োগকারী ভিসায় এসেছেন। আবার অনেকেই পর্তুগাল বা সুইজারল্যান্ডের মতো দেশে অবস্থান করছেন।
ব্রিটেনে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন বেশ কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা। এর মধ্যে পাওয়া গেছে তিনজন নেতার নাম, রণজিত চন্দ্র সরকার (সাবেক সংসদ সদস্য, সুনামগঞ্জ-১ আসন), বিধান কুমার সাহা (সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) এবং সুয়েব আহমদ (সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক)
তাদের মধ্যে একজনের আশ্রয়ের আবেদন ইতোমধ্যেই মঞ্জুর হয়েছে এবং তিনি তার পরিবারকে ব্রিটেনে আনার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন।
যুক্তরাজ্যে থাকা বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা প্রকাশ্যে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিলেও, অনেকে পরিবারসহ নীরবে সময় কাটাচ্ছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন আবদুর রহমান (আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী), শফিকুর রহমান চৌধুরী (সাবেক প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী), সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ (সাবেক ভূমিমন্ত্রী), আজাদুর রহমান আজাদ (সিলেট সিটির সাবেক কাউন্সিলর), খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (সাবেক প্রতিমন্ত্রী)।
এদিকে, ভারত হয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন বেশ কয়েকজন নেতা। তাদের মধ্যে হলেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (অপসারিত মেয়র, সিলেট সিটি করপোরেশন), হাবিবুর রহমান হাবিব (সিলেট-৩ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য)।
তাদের অনেকে ভারতে বৈধ ভিসা না পেয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। কেউ আবার সেখান থেকে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার সুযোগ খুঁজছেন।
ব্রিটেনের দ্য টেলিগ্রাফ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক বছরে ১১ হাজার বাংলাদেশি ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। তবে এর মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ আবেদন সফল হয়েছে।
২০২৩ সালের মে মাসে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, আশ্রয় আবেদন ব্যর্থ হলে দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর বিধান রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চুক্তি বর্তমান প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের নেতাদের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
এদিকে, যাদের অন্য দেশের ভিসা নেই, তারা ভারতে আটকা পড়েছেন। বৈধভাবে দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানের উপায় খুঁজছেন অনেকেই। তামাবিল সীমান্ত দিয়ে যেসব নেতা ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করেছেন বলে জানা গেছে।
পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী নেতাদের ভবিষ্যৎ এখন বেশ অনিশ্চিত এবং জটিল।
thebgbd.com/NA