ঢাকা | বঙ্গাব্দ

তায়াম্মুম: কী এবং কীভাবে করতে হয়

তায়াম্মুম ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি, যা পানি না থাকার অবস্থায় পবিত্রতার জন্য করা হয়।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
তায়াম্মুম: কী এবং কীভাবে করতে হয় সংগৃহীত

এটি মূলত শরীর ও মনে পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য বিশেষ একটি ব্যবস্থা। সাধারণত, যে ব্যক্তি পানি ব্যবহার করতে অক্ষম, তাকে তায়াম্মুম করার অনুমতি দেওয়া হয়। তায়াম্মুমের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি অজু বা গোসলের পরিবর্তে পবিত্রতা অর্জন করতে পারে, বিশেষত তখন, যখন পানি পাওয়া না যায় অথবা পানি ব্যবহারে শারীরিক কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকে।


তায়াম্মুমের কারণ


তায়াম্মুম করার কারণগুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছে:


পানি না পাওয়া: যখন কোনো এলাকায় পানি পাওয়া যায় না বা পানি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।


পানি ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতা: কারও শরীরে পানি ব্যবহার করার জন্য অসুবিধা, যেমন কোনো গুরুতর অসুস্থতা বা ভয়ানক ঠাণ্ডা আবহাওয়া যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।


তায়াম্মুমের নিয়মাবলি


তায়াম্মুম করার নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে, যা শুদ্ধভাবে পালন করা জরুরি। সেগুলি নিম্নরূপ:


নিয়মিত উদ্দেশ্য: তায়াম্মুম করার জন্য অবশ্যই পবিত্রতা অর্জন করার উদ্দেশ্য থাকতে হবে, যা সাধারনত নামাজ বা কুরআন তেলাওয়াতের জন্য প্রয়োজন।


পানি না পাওয়া বা ব্যবহার থেকে বিরত থাকার পরিস্থিতি: তায়াম্মুমের জন্য পানি না পাওয়া বা পানি ব্যবহার করতে অসুবিধা হওয়া উচিত।


বিশুদ্ধ স্থান নির্বাচন: তায়াম্মুম করার জন্য এমন স্থান নির্বাচন করতে হবে যেখানে ধূলা বা মাটি পাওয়া যায়, যেমন মাটি বা বালির ওপর।


মাথা এবং হাত মুছে নেওয়া: প্রথমে হাত ধোয়া উচিত, এরপর সেগুলি মাটি বা বালির ওপর মুছে নিন। তারপর, হাত দিয়ে মুখ এবং হাতের পেছনের অংশ মুছে ফেলুন।


অন্তত একবার মুছে নেয়া: তায়াম্মুমের জন্য কোনো একটি মাটি বা ধূলি অংশ থেকে হাত মুছে নেওয়া প্রয়োজন এবং একবারেই পবিত্রতা অর্জন করা হয়।


শরীরের অন্যান্য অংশে মুছে নেয়া: সাধারণভাবে হাত এবং মুখ মুছে নেওয়ার পর আর কোনো অংশে তায়াম্মুম করা যাবে না।


তায়াম্মুমের শর্তাবলি


সাধারণত ওয়াজিব কাজ: অজু বা গোসলের জন্য তায়াম্মুম শুদ্ধভাবে সম্পন্ন না হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।


মাসআলা (ধর্মীয় সিদ্ধান্ত): তায়াম্মুমের পর যতক্ষণ পানি পাওয়া না যায়, ততক্ষণ তা ধরে রাখা যায়। তবে একবার পানি পাওয়া গেলে, তায়াম্মুম ব্যর্থ হয়ে যাবে এবং আবার অজু বা গোসল করতে হবে।


তায়াম্মুমের মেয়াদ: তায়াম্মুমের পর যতক্ষণ কোনো ব্যক্তি নামাজ বা ধর্মীয় কাজ করছে, ততক্ষণ তাকে শুদ্ধ মনে করা হয়। তবে যদি তায়াম্মুমের পরে কোনো অশুদ্ধ কাজ ঘটে, যেমন মলত্যাগ বা ঘুম, তবে তা পুনরায় তায়াম্মুম করার প্রয়োজনীয়তা তৈরি হবে।


তায়াম্মুমের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়া: তায়াম্মুম করার সময় ‘আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আশহাদু আন্না মুহাম্মদান আব্দুহু ওয়া রসুলুহ’ এই দোয়া পাঠ করা হয়।


তায়াম্মুম ইসলামিক শরিয়তের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা বিশেষ পরিস্থিতিতে মুসলমানদের পবিত্রতা অর্জন করতে সহায়তা করে। এটি মূলত ইসলামিক রীতির একটি নমনীয় দিক, যা বিপদের মুহূর্তে বা অসুবিধাজনক পরিস্থিতিতে সহজে পালনযোগ্য হয়ে থাকে। তায়াম্মুমের নিয়মাবলি সঠিকভাবে মেনে চললে, তা একেবারে শুদ্ধভাবে পালন করা সম্ভব হয় এবং মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করতে পারে।


thebgbd.com/AR