ঢাকা | বঙ্গাব্দ

হ্যাকিংয়ের জন্য দায়ি ইসরায়েলের পেগাসাস : যুক্তরাষ্ট্র

এনএসও যুক্তি দেয়, তাদের থেকে যারা স্পাইওয়্যার কিনছে, তারা কী ভাবে সেটা কাজে লাগাচ্ছে, সেই দায় তাদের নয়।
  • অনলাইন ডেস্ক | ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
হ্যাকিংয়ের জন্য দায়ি ইসরায়েলের পেগাসাস : যুক্তরাষ্ট্র পেগাসাস স্পাইওয়্যার

মেটা প্ল্যাটফর্মের মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপের সার্ভারে প্রবেশ করে নজরদারি সফটওয়্যার ইনস্টল করার মাধ্যমে অবৈধভাবে হ্যাকিং করেছে ইসরায়েলের এনএসও গ্রুপ। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) হোয়াটসঅ্যাপের দায়ের করা মামলায় রায় দিয়েছেন মার্কিন এক বিচারক। উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডে অবস্থিত মার্কিন জেলা বিচারক ফিলিস হ্যামিল্টন হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষে একটি আবেদন মঞ্জুর করেন এবং এনএসওকে হ্যাকিং ও চুক্তি ভঙ্গের জন্য দায়ী করেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।


বিচারক হ্যামিল্টন জানিয়েছেন, এখন মামলাটি শুধু ক্ষতিপূরণের বিষয়ে শুনানির জন্য এগিয়ে যাবে। অবশ্য এ বিষয়ে ইমেইলের মাধ্যমে করা অনুরোধের তাৎক্ষণিকভাবে কোনও জবাব দেয়নি এনএসও গ্রুপ। হোয়াটসঅ্যাপের প্রধান উইল ক্যাথকার্ট এই রায়কে গোপনীয়তার জন্য একটি বড় বিজয় হিসেবে অভিহিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘অবৈধ নজরদারি সহ্য করা হবে না-এই সতর্কবার্তা সবার জন্য।’


সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞরা এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। কানাডার ইন্টারনেট পর্যবেক্ষক সংস্থা সিটিজেন ল্যাবের সিনিয়র গবেষক জন স্কট-রেইলটন, যিনি ২০১৬ সালে এনএসও’র পেগাসাস স্পাইওয়্যার প্রথম প্রকাশ করেন, একে স্পাইওয়্যার ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি ‘মাইলফলক রায়’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি একটি বার্তায় বলেন, ‘পুরো ইন্ডাস্ট্রি এই অজুহাত দিয়ে লুকিয়ে ছিল যে তাদের হ্যাকিং টুল ব্যবহার করে তাদের গ্রাহকরা যা কিছু করে, তার জন্য তারা দায়ী নয়। আজকের রায় এটা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এনএসও গ্রুপ সত্যিই অসংখ্য আইন ভঙ্গের জন্য দায়ী।’


২০১৯ সালে এনএসও’র বিরুদ্ধে মামলা করে এর নিষেধাজ্ঞা ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে হোয়াটসআ্যপ। মামলায় অভিযোগ করা হয়, হোয়াটসঅ্যাপ সার্ভারে অনুমতি ছাড়াই প্রবেশ করে পেগাসাস সফটওয়্যার ইনস্টল করার মাধ্যমে ১,৪০০ ব্যক্তির ওপর নজরদারি করা হয়েছে। এই ব্যক্তিদের মধ্যে সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং ভিন্নমতাবলম্বীরা ছিলেন। এছাড়া এনএসও বিভিন্ন দেশের সরকারের জন্য এই স্পাইওয়্যার তৈরি করে, যাতে দেশগুলোর সরকার প্রয়োজনে বিরুদ্ধমতবাদ পোষণকারিদের ফোনে আড়ি পাততে পারে।


এনএসও’র দাবি, পেগাসাস আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে অপরাধ মোকাবিলায় সহায়তা করে। এর প্রযুক্তি সন্ত্রাসী, শিশু নিপীড়ক ও চরম অপরাধীদের ধরতে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে তৈরি। মার্কিন আদালত বলেছে, এনএসও আইন ভেঙেছে। এনএসও যুক্তি দেয়, তাদের থেকে যারা স্পাইওয়্যার কিনছে, তারা কী ভাবে সেটা কাজে লাগাচ্ছে, সেই দায় তাদের নয়। আদালত এই যুক্তি খারিজকরে দিয়েছে। ২০২০ সালে এনএসওকে দায়মুক্তি দেওয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন এক বিচারক। মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট গত বছর নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এনএসও’র আপিল প্রত্যাখ্যান করে। ফলে মামলাটি এগিয়ে যাওয়ার অনুমতি পায়। পাঁচ বছর পরে এই মামলার রায় হলো।


সূত্র: রয়টার্স