আমড়া একটি জনপ্রিয় ও পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল, যা সারা বছর পাওয়া গেলেও বর্ষাকালে এর চাহিদা বেশি থাকে। এটি খেতে টক-মিষ্টি এবং বিভিন্ন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমড়া শুধু স্বাদেই অনন্য নয়, বরং এটি শরীরের জন্যও অনেক উপকারী।
আমড়ার পুষ্টিগুণ নিয়ে পুষ্টিবিদ ডা. সুমাইয়া হাসান বলেন, ‘আমড়া হলো ভিটামিন সি, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ একটি ফল। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়ায় রয়েছে:
ভিটামিন সি: ২০-২৫ মিগ্রাম
ডায়েটারি ফাইবার: ২-৩ গ্রাম
ক্যালরি: ৫০-৬০ ক্যালরি
ক্যালসিয়াম: ৩৫-৪০ মিগ্রাম
আমড়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: আমড়ায় থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এটি সর্দি-কাশি এবং ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
২. হজম শক্তি বৃদ্ধি: আমড়ার ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করতে কার্যকর। আমড়ার আঁশ পেট পরিষ্কার রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
৩. ত্বকের যত্ন: ভিটামিন সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বককে সুস্থ রাখে। আমড়ায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের কোষকে ফ্রি র্যাডিকালসের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
৪. রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ: আমড়া আয়রন শোষণে সাহায্য করে, যা রক্তস্বল্পতা দূর করতে কার্যকর। ভিটামিন সি আয়রনের শোষণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণ: আমড়ায় ক্যালরি কম এবং ফাইবার বেশি থাকায় এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে দীর্ঘসময় তৃপ্তি দেয়।
৬. হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি: আমড়ায় থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করতে সাহায্য করে।
৭. লিভারের যত্ন: আমড়া লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং এটি ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা:
১. অতিরিক্ত টক হওয়ায় এটি বেশি খেলে দাঁতের ক্ষতি হতে পারে।
২. গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে পরিমিতভাবে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদরা।
৩. ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে মিষ্টি আমড়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
আমড়া একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল, যা স্বাস্থ্যরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত আমড়া খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, হজমশক্তি উন্নত হয় এবং ত্বক ও হাড়ের জন্য উপকারী হয়। তবে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্যগত প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চলা উচিত।