ঢাকা | বঙ্গাব্দ

খুনি-ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের প্রতিশ্রুতি দিলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ২৩টি রাজ্যে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে ছয়টি রাজ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
  • অনলাইন ডেস্ক | ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
খুনি-ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের প্রতিশ্রুতি দিলেন ট্রাম্প ডোনাল্ড ট্রাম্প

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালীন মৃত্যুদণ্ডের ব্যবহার বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, তিনি ‍‍‘ধর্ষক, খুনি এবং দানবদের’ দ্রুততার সঙ্গে অপসারণ করবেন। বিদায়ী রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন তার রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ক্ষমতা ব্যবহার করে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রায় সব ফেডারেল বন্দীদের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে কমিয়ে দেওয়ার পরে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ট্রাম্পের ঘোষণাটি এসেছে। কাতারের আল জাজিরা টেলিভিশন এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।


এর আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩৭ অপরাধীর সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। বড়দিনের আগে সোমবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের প্রেক্ষাপটে বাইডেন এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। শাস্তির পরিমাণ কমলেও তাদের পে-রোলের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগ।


ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হতে আর এক মাস বাকি থাকতে মৃত্যুদণ্ড-বিরোধীদের ক্রমবর্ধমান চাপে পড়ে বাইডেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি ৪০ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির মধ্যে ৩৭ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে তারা পে-রোল ছাড়া জীবনের বাকি সময় কারাগারে কাটাবেন।


এখন কেবলমাত্র কয়েকজন হাই-প্রোফাইল বিদ্বেষমূলক বা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অপরাধীর ফেডারেল মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের অধীনে ফেডারেল মৃত্যুদণ্ড কার্য করে নিষেধাজ্ঞা থাকলে ও এসব ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের ওপর আমার প্রশাসন যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তা সন্ত্রাসবাদ ও ঘৃণাজনিত গণহত্যার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এই নীতির ভিত্তিতেই ৩৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কমানো হয়েছে।’


ফেডারেল মৃত্যুদণ্ডে থাকা তিন জন অপরাধীর মধ্যে রয়েছেন বোস্টন ম্যারাথন বোমা হামলায় অংশগ্রহণকারী জো খারসার নায়েভ, দক্ষিণ ক্যারোলিনার চার্লস্টনের একটি চার্চে ২০১৫ সালে ৯ জন কৃষ্ণাঙ্গ উপাসককে গুলি করে হত্যাকারী ডিলান রুফ এবং ২০১৮ সালে পিটসবার্গের ট্রি অব লাইফ সিনাগগে ১১ জন ইহুদি উপাসককে হত্যার দায়ে দণ্ডিত রবার্ট বাওয়ার্স।


বাইডেন বলেন, ‘এই হত্যাকারীদের নিন্দা জানাই এবং ভুক্তভোগীদের জন্য শোক প্রকাশ করি। তবে আমার বিবেক ও অভিজ্ঞতার আলোকে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ফেডারেল পর্যায়ে মৃত্যুদণ্ডের ব্যবহার বন্ধ হওয়া উচিত।’ বাইডেন প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী থাকাকালে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করেছিলেন এবং দায়িত্ব নেয়ার পর বিচার বিভাগ ফেডারেল মৃত্যুদণ্ড কার্য করে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।


অন্য দিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনর্নির্বাচনের প্রচারণায় মৃত্যুদণ্ড বাড়ানোর পক্ষে কথা বলেছেন। তিনি অভিবাসীদের অপরাধ এবং মাদক ও মানব পাচারকারীদের জন্য মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন। ২০০৩ সালের পর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে কোন ও ফেডারেল মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি। তবে ট্রাম্পের আমলে, ২০২০ সালের জুলাইয়ে এই প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু হয়। তার শাসনামলের শেষ ছয় মাসে ১৩টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়, যা ১২০ বছরের মধ্যে কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টের আমলে সর্বোচ্চ।


যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ২৩টি রাজ্যে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে ছয়টি রাজ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে রাজ্য পর্যায়ে ২৫টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।


সূত্র: আল জাজিরা


এসজেড