সদ্য প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ জানিয়েছে, যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ায় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অর্ধেকেরও বেশি স্কুলগামী শিশু। যুদ্ধ পরবর্তী দুই সপ্তাহে সিরিয়াজুড়ে পর্যবেক্ষণের পর প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে এই তথ্য উঠে আসলে, দাতব্য সংস্থাটি অবিলম্বে শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, সিরীয় শিশুদের মধ্যে অন্তত অর্ধেকের ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধের আঘাত কাটিয়ে উঠতে মানসিক সাহায্যের প্রয়োজন। এছাড়া শিশুদের সিংহভাগেরও বেশি, খাদ্যসহ মানবিক সহায়তাও জরুরি। বার্তা সংস্থা এএফপি আজ এই খবর জানিয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন - এর সিরিয়া বিষয়ক পরিচালক রাশা মুহরেজ রাজধানী দামেস্ক থেকে এক সাক্ষাতকারে এএফপিকে বলেছেন, ‘প্রায় ৩৭ লক্ষ শিশু স্কুলের বাইরে এবং তাদের পুনরায় একত্রিত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। ৩৭ লক্ষ শিশুর অর্ধেকেরও বেশি স্কুল বয়সী হলেও তারা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত।’
সিরিয়ার জনগণ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সংঘাতময় পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। কিন্তু বিদ্রোহীদের ঝটিকা আক্রমনে ৮ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় আসাদ যুগের অবসান ঘটে। জাতিসংঘের হিসেব মতে, এই সময় নতুন করে ৭ লক্ষ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। রাশা মুহরেজ বলেছেন, ‘বাস্তুচ্যুতরা আবার দেশে ফিরতে শুরু করায় কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিণত হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে।’
সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর আসাদ সরকারের নৃশংস দমন-পীড়নের পর ২০১১ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ সিরিয়ার অর্থনীতি এবং সরকারি অবকাঠামো ধ্বংস হওয়ায় অনেক শিশুই অরক্ষিত রয়ে গেছে। রাশা বলেন, ‘প্রায় ৭৫ লক্ষ শিশুর অবিলম্বে মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, শিশুরা যাতে শিক্ষায় ফিরে আসতে পারে। তাদের স্বাস্থ্য, খাবারের সুব্যবস্থা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।’
দাতব্য প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এএফপিকে আরো জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আর্থিক সংকট এবং সর্বোপরি গৃহযুদ্ধের কারণে ‘শিশুরা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সুরক্ষা, আশ্রয়সহ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।’ সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধে ৫ লক্ষেরও বেশি নিহত এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছে লক্ষ লক্ষ লোক। বিশ্বব্যাংকের হিসেব মতে চারজনের মধ্যে একজনেরও বেশি সিরীয় নাগরিক এখন চরম দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করছে। সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, প্রায় ৬৪ লক্ষ শিশুর জরুরি মানসিক সাহায্যের প্রয়োজন।
সূত্র: আল জাজিরা
এসজেড