ঢাকা | বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণ-অভুত্থানের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে বলেছেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪
অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছবি : সংগৃহীত।

অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণ-অভুত্থানের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে বলে আল্টিমেটাম দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশে তিনি এ আল্টিমেটাম দেন।


অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণ-অভুত্থানের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে বলে আল্টিমেটাম দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশে তিনি এ আল্টিমেটাম দেন।


হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এতদিন পর্যন্ত আমাদের এই জুলাই গণ-অভুত্থানের কোনো ঘোষণাপত্র ছিলো না। আমরা বলতে চাই ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণ-অভুত্থানের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে। উপস্থিত সবাইকে উদ্দেশ্য করে হাসনাত আরো বলেন, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আপনারা জেলায় জেলায় পাড়া মহল্লায় মানুষের কাছে যাবেন, তারা কি বলতে চায় সে কথাগুলো উঠিয়ে নিয়ে আসবেন। যারা এখনো ষড়যন্ত্র করছেন তাদের বলতে চাই আপনাদের আম্মু আর দেশে ফিরবে না। যাকে আমরা সীমান্তের ওপারে পাঠিয়েছি তাকে আর এ দেশে পুর্নবাসনের সুযোগ দেয়া হবে না।


এ সময় তিনি বলেন, আজ এতদিন হয়ে গেলো এখনো বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে পারিনি। আমরা দেখিছি পিলখানায় দেশপ্রেমিক অফিসারদের একজন একজন করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা চাই অতি শিগগিরই পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। আমরা শাপলা চত্বর ভুলে যাইনি। শাপলাতে লাইট নিভিয়ে রাতের আঁধারে আলেম-ওলামাদের হত্যা করা হয়েছে। আলেম-ওলামাদরে হত্যার সেই বিচার নিশ্চিত করতে হবে। গুম খুনের বিচার করতে হবে। এ দেশে এখন আর আমাদের কোনো শত্রু নেই। আমাদের একমাত্র শত্রু আওয়ামী লীগ। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।


সরকারকে উদ্দেশ্য করে হাসনাত বলেন, ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। দ্রব্যমূল্য এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আপনি যদি মনে করেন বারবার বলতে থাকেন সিন্ডিকেট এক হাত থেকে আরেক হাতে গিয়েছে। তাহলে আপনার কাজটা কি। যেখানেই সিন্ডিকেট তাদের হাত ভেঙে দিতে হবে। এছাড়া কোনো বিপ্লবীর গায়ে যদি হাত উঠে এ সরকারকে তার দায়ভার নিতে হবে।


জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, জানুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে জুলাই প্রোকলেমেশন ঘোষণা না করলে ছাত্রজনতা আবারো রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। ছাত্রজনতার প্রতি অনুরোধ, আপনারা বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত না করে রাজপথ ছাড়বেন না।


জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, এ দেশের মানুষ এক নতুন বাংলাদেশ চায়। বাংলাদেশের মানুষ নতুন সংবিধান চায়। বাংলাদেশের মানুষ সংস্কার চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা যখন জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠের আয়োজনের ঘোষণা দেয় তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক সংগঠনের সমন্বয়ে ঘোষণাপত্র পাঠের ঘোষণা দেয়া হয়। এ ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বলতে চাই, অবিলম্বে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করতে হবে।  তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই নতুন সংবিধান হবে। আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। সে নির্বাচনে নির্বাচিতরাই সংবিধান সংশোধন করবে। বাংলাদেশের মানুষের অসংখ্য চাওয়া আছে, আগামীর নির্বাচনে যারা জয়ী হবেন তাদের সেই চাওয়াগুলো পূরণ করতে হবে।


এর আগে মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় এই অনুষ্ঠান শুরুর কথা থাকলেও তা শুরু হয় এক ঘণ্টা বাদে। এই কর্মসূচি উপলক্ষে সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্র-জনতা মিছিল আর ব্যানার, পতাকা, ফেস্টুন নিয়ে জড়ো হতে শুরু করেন। তারা ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ', ‘উই ওয়ান্ট উই ওয়ান্ট, জাস্টিস, জাস্টিস, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ'-এমন নানা স্লোগান দিতে থাকেন। সমাবেশস্থলে পুলিশ, পুলিশের ডগ স্কোয়াড, র‌্যাব, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন।  মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচি থেকেই মঙ্গলবার ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের ঘোষণা ছিল। তবে সোমবার রাতে জরুরি বৈঠক শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষণা দেয়, অন্তর্বর্তী সরকার একই ধরনের ঘোষণাপত্র তৈরি করছে, আর তাতে সমর্থন আছে তাদের।    


thebgbd.com/NA