ঢাকা | বঙ্গাব্দ

অ্যাজমা থাকলে সতর্কতা অবলম্বন করুন

অ্যাজমা একটি দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসজনিত রোগ, যা ফুসফুসের বায়ুনালীতে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা তৈরি করে।
  • | ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫
অ্যাজমা থাকলে সতর্কতা অবলম্বন করুন অ্যাজমা

অ্যাজমা একটি দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসজনিত রোগ, যা ফুসফুসের বায়ুনালীতে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা তৈরি করে। এটি সাধারণত ধুলাবালি, পরাগকণা, ধোঁয়া, ঠান্ডা আবহাওয়া, কিংবা বিভিন্ন অ্যালার্জেন দ্বারা প্রভাবিত হয়। যাদের অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে, তাদের প্রতিদিনের জীবনে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


প্রথমত, অ্যাজমা রোগীদের তাদের ট্রিগারগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি। প্রতিটি ব্যক্তির ট্রিগার ভিন্ন হতে পারে, যেমন ধুলা-ময়লা, পশুর লোম, খাবার অ্যালার্জি, অথবা আবহাওয়ার পরিবর্তন। এ ধরণের উপাদান এড়িয়ে চলাই অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণের প্রথম পদক্ষেপ।


পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অ্যাজমা রোগীদের জন্য অপরিহার্য। ঘরের ধুলাবালি প্রতিদিন পরিষ্কার করা, বিছানার চাদর নিয়মিত ধোয়া এবং ধুলোরোধী কভার ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া, ঘরে কোনো ধোঁয়ার সৃষ্টি না করা এবং এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করলে পরিবেশ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রিত রাখা সম্ভব।


ঠান্ডা আবহাওয়া এবং শীতকালের সময় বিশেষ সতর্ক থাকতে হয়। শীতের সময় বাতাস শুষ্ক থাকে, যা অ্যাজমার সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। এ সময় গরম কাপড় পরা, মুখ ঢেকে রাখা এবং প্রচণ্ড ঠান্ডা খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত।


অ্যাজমা রোগীদের সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনহেলার ব্যবহার করা উচিত। ইনহেলার নিয়মিত ব্যবহার অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হঠাৎ শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। তবে, অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়া বা ওষুধ পরিবর্তন করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।


শরীরচর্চা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অ্যাজমার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করতে পারে। তবে, ভারী ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম অ্যাজমা রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তাই মৃদু ব্যায়াম এবং যোগব্যায়াম করা যেতে পারে।


অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে মানসিক চাপও বড় ভূমিকা পালন করে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ অ্যাজমার উপসর্গ বাড়াতে পারে। তাই রোগীদের রিল্যাক্সেশন টেকনিক এবং মনকে শান্ত রাখার অভ্যাস গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ।


অ্যাজমা এমন একটি রোগ, যা সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করা সম্ভব নয়, তবে সঠিক যত্ন এবং সচেতনতার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ, জীবনযাত্রায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন, এবং সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে অ্যাজমা রোগীরা সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।