বিপদ আপদ মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে, বিপদে ধৈর্য ধারণ করা এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা ইমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কোরআন ও হাদিসে বিভিন্ন দোয়া উল্লেখ আছে, যা বিপদের মুহূর্তে মুমিনের জন্য শান্তি ও সাহায্যের উৎস হতে পারে।
কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, "তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।" (সূরা গাফির: ৬০)
এ আয়াত আমাদের শেখায় যে আল্লাহ আমাদের দোয়া শুনেন এবং তা কবুল করেন। বিশেষ করে বিপদের সময় যখন মানুষ আন্তরিকভাবে তাঁর কাছে প্রার্থনা করে, তখন আল্লাহ তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেন।
একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া হলো, "লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ-জালিমীন"
(অর্থ: তুমি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, তুমি পবিত্র; আমি অবশ্যই অন্যায়কারীদের মধ্যে একজন।)
এই দোয়াটি হজরত ইউনুস (আ.) এর দোয়া, যা তিনি মাছের পেটে থাকার সময় পড়েছিলেন। (সূরা আম্বিয়া: ৮৭)। এটি পড়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও সাহায্য প্রার্থনা করা হয়।
হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি বিপদের সময় এই দোয়া পড়ে, আল্লাহ তাকে অবশ্যই মুক্তি দেন।" (তিরমিজি)
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া হলো: "হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিআমাল ওয়াকিল"
(অর্থ: আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, এবং তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক।)
এই দোয়াটি ইব্রাহিম (আ.) বলেছিলেন, যখন তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করা হচ্ছিল। এটি বিপদের সময় মুমিনের জন্য শক্তি ও আশ্রয়ের দোয়া।
বিপদের সময় আল্লাহর সাহায্য কামনার পাশাপাশি ধৈর্য ধারণ করা এবং আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ ভরসা রাখা জরুরি। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যখন কোনো বিপদ আসে, তখন মুমিন বলে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। এতে আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দেন।" (সহীহ মুসলিম)।
বিপদ আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষার একটি অংশ। এতে ধৈর্য ধারণ করে এবং দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা উচিত। আল্লাহ সবসময় তাঁর বান্দার দোয়া শুনেন এবং তা কবুল করেন। তাই বিপদের সময় আল্লাহর কাছে ফিরে আসা এবং দোয়া করা আমাদের জন্য শান্তি ও মুক্তির পথ।
thebgbd.com/NIT