শিল্পখাতে গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। এই সিদ্ধান্তের ফলে নতুন কারখানাগুলোর উদ্যোক্তাদের গ্যাস কিনতে বর্তমান দামের দ্বিগুণের বেশি ব্যয় করতে হতে পারে। প্রস্তাব অনুযায়ী, নতুন কারখানার জন্য গ্যাসের দাম নির্ধারিত হবে এলএনজির আমদানি খরচের ভিত্তিতে।
গতকাল সোমবার বিকেলে প্রস্তাবটি পেট্রোবাংলার মাধ্যমে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) পাঠানো হয়। জানা গেছে, আজ এ বিষয়ে বিইআরসিতে আলোচনা হতে পারে।
বর্তমানে শিল্প গ্রাহকরা প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের জন্য ৩০ টাকা এবং ক্যাপটিভ পাওয়ারে ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা খরচ করেন। তবে আমদানি করা এলএনজির গড় খরচ ৬০-৬৫ টাকার মধ্যে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা দেওয়া হলেও তা পূরণ করা হচ্ছে না। বরং গ্যাসের অভাবে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় গ্যাসের মূল্য দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি শিল্প খাতের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ ডিসেম্বরের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম হবে এলএনজির আমদানির ব্যয়ের সমান। তবে যেসব গ্রাহক আগে থেকেই সংযোগের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন, তারা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত গ্যাসের দাম বর্তমান দরে এবং বাকি ৫০ শতাংশ এলএনজির মূল্যে পাবেন।
পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা জানান, এলএনজির আমদানিমূল্য বলতে তিন মাসের গড় খরচ (দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি ও স্পট মার্কেট) বোঝানো হয়েছে। প্রস্তাব চূড়ান্ত করার জন্য ছয়টি বিতরণ কোম্পানির কাছ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। বিকেএমইএর প্রেসিডেন্ট হাতেম আলী বলেছেন, প্রস্তাবটি কার্যকর হলে নতুন ও পুরনো উদ্যোক্তাদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা তৈরি হবে, যা বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করবে।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি অধ্যাপক শামসুল আলম মন্তব্য করেছেন, গ্রাহকেরা যথাযথ গ্যাস পাচ্ছেন না, অথচ তাদের দাম বৃদ্ধি মেনে নিতে হচ্ছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়াবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাহী আদেশে গ্যাসের দাম গড়ে ৮২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল, যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে আবারও সংশ্লিষ্ট মহলে তীব্র উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
thebgbd.com/NA