মেয়েদের শারীরিক গঠন নিয়ে মন্তব্য করা যৌন হেনস্থার সমান। একটি মামলায় রায়ে এমনটাই বলেছে কেরালা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, কোনও মহিলার শারীরিক গঠন নিয়ে মন্তব্য আসলে যৌনগন্ধী। তা যৌন হেনস্থার মামলার আওতায় পড়তে পারে। সেই অনুযায়ী শাস্তিও হতে পারে মন্তব্যকারীর। ফলে মহিলাদের শারীরিক গঠন নিয়ে মন্তব্য করার আগে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
কেরালার রাজ্য বিদ্যুৎ বিভাগে কর্মরত এক যুবকের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে মামলা করেন তারই এক সহকর্মী মহিলা। মামলার অভিযোগ, ২০১৩ সাল থেকে ওই যুবক তার শারীরিক গঠন নিয়ে নানা মন্তব্য করে এসেছেন। সেগুলি অপমানজনক বলে মনে হয়েছে ওই মহিলার। শুধু তা-ই নয়, ২০১৬-১৭ সাল থেকে মহিলাকে অশ্লীল বার্তা পাঠাতে এবং ভয়েস কলও করতে শুরু করেন অভিযুক্ত। তার বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ বিভাগে এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন মহিলা। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে কোনও পক্ষ থেকেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পরে মহিলা আদালতের দ্বারস্থ হন।
কেরালা হাইকোর্টের বিচারপতি এ বদরুদ্দীনের এজলাসে সম্প্রতি এই মামলার শুনানি হয়েছে। মহিলার অভিযোগ যেন খারিজ করা হয়, তাই চেয়ে আদালতে পাল্টা মামলা করেন অভিযুক্ত। তার আইনজীবী জানান, কোনও মহিলার শারীরিক গঠনের প্রশংসা করলে তা যৌন হেনস্থা হতে পারে না। ওই যুবক মহিলা সহকর্মীর শারীরিক গঠনের প্রশংসা করেন এবং তাকে জানান, তার শরীর সুন্দর।
শুনানিতে আদালতে মহিলার আইনজীবী জানান, তার মক্কেলের সম্মানহানি করতে এবং তাকে হেনস্থা করার উদ্দেশ্যেই ওই মন্তব্য করা হয়েছে। বিচারপতি মহিলার পক্ষেই রায় দিয়েছেন। জানিয়েছেন, যুবকের মন্তব্য ‘যৌনগন্ধী’। ফলে যৌন হেনস্থার মামলা তার বিরুদ্ধে বহাল থাকবে। যুবকের ফোন এবং মহিলাকে পাঠানো মেসেজগুলিও এ ক্ষেত্রে তার বিপক্ষে গেছে প্রমাণ হিসেবে।
শুনানির রায়ে আদালত জানায়, সৌন্দর্য্যের প্রশংসা এবং শরীরের প্রশংসা দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। সৌন্দর্য্য মানসিক বিষয় হলেও শরীরের প্রসঙ্গ আসলে অবশ্যই সেটি যৌনতার সঙ্গে সম্পর্কিত। পুরুষ সহকর্মী অবশ্যই সেটি করতে পারেন না। মামলা খারিজ না করে উল্টো আদালত দুই পক্ষের আইনজীবীদের পরবর্তী নির্ধারিত দিনে প্রমাণাদি হাজির করতে আদেশ দেন।
সূত্র: এনডিটিভি
এসজেড