ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ডায়াবেটিস রোগীদের এসব বিষয় জানা জরুরি

ডায়াবেটিস এমন একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
  • | ০৮ জানুয়ারি, ২০২৫
ডায়াবেটিস রোগীদের এসব বিষয় জানা জরুরি ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিস এমন একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের কিছু বিষয় জানা এবং তা মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।


প্রথমত, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করা প্রয়োজন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি হলো রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা সঠিক রাখা। নিয়মিত ব্লাড সুগার পরীক্ষা করলে খাদ্যাভ্যাস, ওষুধ, এবং জীবনযাপনের প্রভাব সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়।


সুষম খাদ্যাভ্যাস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রোগীদের কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার বেছে নিতে হবে, যেমন শাকসবজি, বাদাম, পূর্ণ শস্য, এবং লো-ফ্যাট প্রোটিন। চিনি এবং উচ্চ কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। খাবার সময় এবং পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


শারীরিক কার্যকলাপ নিয়মিত করতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য হালকা থেকে মাঝারি ব্যায়াম যেমন হাঁটা, সাইক্লিং, বা ইয়োগা অত্যন্ত উপকারী। ব্যায়াম শরীরের ইনসুলিন কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তবে, ব্যায়ামের আগে এবং পরে রক্তে শর্করার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা উচিত।


ওষুধ এবং ইনসুলিন নিয়মিত এবং সঠিকভাবে গ্রহণ করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ এবং ইনসুলিন প্রয়োগ করতে হবে। কখনোই ওষুধ বা ইনসুলিন ডোজ এদিক-সেদিক করা যাবে না। কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি।


মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত মানসিক চাপ হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। মানসিক চাপ কমানোর জন্য মেডিটেশন, পর্যাপ্ত ঘুম, এবং মনোরম কাজে সময় ব্যয় করা যেতে পারে।


পায়ের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিস রোগীদের মাঝে পায়ের ক্ষত দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে এবং তা মারাত্মক হতে পারে। প্রতিদিন পা পরীক্ষা করা, পরিষ্কার রাখা, এবং প্রয়োজনীয় তেল বা ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। কোনো ক্ষত বা ফোসকা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।


নিয়মিত ডাক্তারের কাছে যাওয়া এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অপরিহার্য। রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, কিডনি, এবং চোখের স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা করে রোগের জটিলতা এড়ানো সম্ভব।


ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সঠিক জ্ঞান ও সতর্কতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত চর্চা এবং পরামর্শ মেনে চললে এই রোগের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।