মজলুমের দোয়া আল্লাহর দরবারে বিশেষভাবে কবুল হয় বলে কোরআন ও হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী, মজলুম ব্যক্তি সেই মানুষ, যাকে অন্যায়ভাবে নির্যাতন, জুলুম বা কষ্ট দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় তার দোয়া আল্লাহর কাছে দ্রুত পৌঁছে যায়, কারণ মজলুমের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ থাকে।
কোরআনে আল্লাহ জালিমদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “তোমরা জালিমদের দিকে ঝুঁকো না, তা হলে আগুন তোমাদের স্পর্শ করবে।” (সুরা হুদ, আয়াত ১১৩)।
এ থেকে বোঝা যায়, যারা মজলুমদের ওপর জুলুম করে, তারা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়। আর মজলুমরা তাদের প্রতি হওয়া জুলুমের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা কবুল করেন।
হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তিন ব্যক্তির দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয় না—রোজাদারের ইফতারের সময়ের দোয়া, ন্যায়বান শাসকের দোয়া, এবং মজলুমের দোয়া। আল্লাহ তা'আলা মজলুমের দোয়া মেঘের ওপর তুলে নেন এবং তার জন্য আসমানের দরজা খুলে দেন। আল্লাহ বলেন, 'আমার সম্মানের কসম! আমি অবশ্যই তোমার সাহায্য করব, যদিও তা কিছু সময় পর হয়।’” (সহীহ বুখারি ও মুসলিম)।
এখানে দেখা যায়, মজলুমের দোয়া আল্লাহর কাছে সরাসরি পৌঁছায় এবং তিনি তা গ্রহণ করেন। মজলুম ব্যক্তির কোনো মধ্যস্থতাকারীর প্রয়োজন হয় না; তার দোয়া সরাসরি আল্লাহর দরবারে পৌঁছায়।
ইসলাম মজলুমের পাশে দাঁড়াতে এবং জালিমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে উৎসাহিত করে। যদি কোনো ব্যক্তি মজলুম হয়ে থাকে, তবে তার অধিকার রয়েছে আল্লাহর কাছে দোয়া করার এবং সাহায্য চাওয়ার। তবে ইসলামে প্রতিশোধের পরিবর্তে ধৈর্য ও ক্ষমার গুণাবলিকে আরও বেশি মূল্যায়ন করা হয়েছে।
মজলুমের দোয়া কবুল হওয়ার বিষয়টি মুসলমানদের জন্য একদিকে সান্ত্বনার বার্তা বহন করে, অন্যদিকে এটি অন্যায়কারীদের জন্য এক ধরনের সাবধানবার্তা। অতএব, অন্যায় করা থেকে বিরত থাকা এবং মজলুমদের পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেক মুসলিমের দায়িত্ব।
thebgbd.com/NIT