ঢাকা | বঙ্গাব্দ

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ পুনর্বিন্যাসের দাবি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ পুনর্বিন্যাসের দাবি সংগৃহীত

বিতর্কিত ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের পর প্রস্তাবিত সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-কে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে নেওয়া সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও, কমিটি অধ্যাদেশটির বিভিন্ন ধারা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।  


কমিটির অভিযোগ, প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি পূর্ববর্তী আইনসমূহের মতোই ঔপনিবেশিক ধারণাগুলির উত্তরাধিকার বহন করছে। বিশেষ করে, কম্পিউটার-সংক্রান্ত অপরাধ এবং মতপ্রকাশ-সংক্রান্ত অপরাধকে একত্রিত করায় আইনের উদ্দেশ্য অস্পষ্ট ও দুর্বল হয়ে পড়েছে।  


প্রস্তাবিত আইনে সাইবার স্পেসের ব্যাপক সংজ্ঞা এবং "ধর্মীয় অনুভূতি", "অশ্লীল" প্রভৃতি অস্পষ্ট শব্দের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কমিটি। তাদের মতে, এ ধরনের শব্দগুলো ঔপনিবেশিক দণ্ডবিধি থেকে প্রাপ্ত এবং এসব শব্দের অপব্যবহারের আশঙ্কা প্রবল। এ ছাড়া, "শৈল্পিক" বা "শিক্ষাগত মূল্য" নিয়ে অস্পষ্টতা সৃজনশীলতাকে দমন করার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।  


কমিটি আরও জানায়, অধ্যাদেশে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং জাতীয় সাইবার সুরক্ষা সংস্থার মহাপরিচালকের অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদানের বিষয়টিও উদ্বেগজনক। এসব ক্ষমতার মাধ্যমে অস্পষ্ট ভিত্তিতে বিষয়বস্তু ব্লক বা অপসারণ করা যেতে পারে, যা স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ সৃষ্টি করবে।  


খসড়া অধ্যাদেশে তল্লাশির ক্ষেত্রে পরোয়ানা ছাড়ার বিধান এবং ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জন্য ব্যাপক ক্ষমতা সৃষ্টি করেছে বলে মনে করছে নাগরিক কমিটি। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, এ ধরনের বিধান সংবিধান প্রদত্ত গোপনীয়তার অধিকারের লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের ঝুঁকি বাড়াবে।  


কমিটি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, অধ্যাদেশটি পুনর্বিবেচনা করে বিভিন্ন অংশীজনের মতামত প্রতিফলিত করার জন্য একটি স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হোক। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইনের ধারা পুনর্গঠন করার দাবি জানিয়েছে।  


জাতীয় নাগরিক কমিটি আরও জানিয়েছে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের অধীনে এখনো কোনো মামলা বাতিল বা নিষ্পত্তি করা হয়নি। এতে ভুক্তভোগীদের ভোগান্তি অব্যাহত রয়েছে।  


কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেছেন, "সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তবে সেন্সরশিপ, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং মৌলিক স্বাধীনতার লঙ্ঘন আরও বাড়বে।"  


জাতীয় নাগরিক কমিটি সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-এ গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা এবং মানবাধিকারের প্রতিফলন নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।


thebgbd.com/NIT