ইউরোপের তিন শক্তিশালী দেশ যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সের সঙ্গে পরমাণু আলোচনায় বসতে চলেছে ইরান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের এক সপ্তাহ আগেই এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জেনেভা থেকে এএফপি এখবর জানায়।
ই-৩ নামে পরিচিত তিন ইউরোপীয় পরমাণু শক্তিধর এবং ইরানের মধ্যে নভেম্বরে সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে অনুষ্ঠিত একটি ফলপ্রসূ বৈঠকের পর দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দেশগুলো আবারও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে দ্বিতীয় দফা আলোচনায় বসছে। যদিও জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘এটা কোনও আলোচনা নয়।’ ইরান একইভাবে জোর দিয়ে বলেছে, এই যে আলোচনা আসলে তাদের জন্য ‘পরামর্শ’। বৃহস্পতিবার ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ই-৩ দেশগুলো ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির একটি কূটনৈতিক সমাধানের দিকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, এই বৈঠকটি তারই ইঙ্গিত। তবে এর অগ্রগতি অত্যন্ত সমস্যাযুক্ত।’
আগামী ২০ জানুয়ারিতে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে আসন্ন প্রত্যাবর্তনের আলোকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির উপর নতুন করে দৃষ্টি দেয়ায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তার প্রথম মেয়াদে, ট্রাম্প ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতি অনুসরণ করেন এবং চলমান পারমাণবিক আলোচনা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেন। তেহরান ওয়াশিংটনের প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত চুক্তিটি মেনে চলে, কিন্তু তারপরে তার প্রতিশ্রুতিগুলো ফিরিয়ে নিতে শুরু করে। ফলশ্রুতিতে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা তখন থেকে ব্যর্থ রয়েছে এবং ইউরোপীয় কর্মকর্তারা তেহরানের অসম্মতি নিয়ে বারবার হতাশা প্রকাশ করেছেন। গত সপ্তাহে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ত্বরান্বিত হওয়া ‘আমাদের ব্রেকিং পয়েন্টের খুব কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছে’। ইরান তার এই মন্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন’ এবং ‘প্রতারণামূলক’ বলে হতাশা প্রকাশ করে।
ডিসেম্বরে, ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্স তেহরানকে ‘কোন বিশ্বাসযোগ্য বেসামরিক ন্যায্যতা’ ছাড়াই ‘অভূতপূর্ব মাত্রায়’ উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ বৃদ্ধির জন্য অভিযুক্ত করে। তারা বলেন, ‘ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে প্রয়োজনে স্ন্যাপব্যাক ব্যবহার করাসহ সমস্ত কূটনৈতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করার জন্য আমাদের দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করছি।’
স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম - ২০১৫ সালের চুক্তির অংশ, যা জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিপিওএ)- নামে পরিচিত - প্রতিশ্রুতিগুলোর ‘উল্লেখযোগ্য অ-কর্মক্ষমতা’ এর ক্ষেত্রে স্বাক্ষরকারীদের ইরানের উপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করার অনুমতি দেয়। ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি এজেন্সি (ইএইএ) নিউক্লিয়ার ওয়াচডগ বলেছে, ইরান তার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের উৎপাদন বাড়িয়েছে এবং এটিই একমাত্র অ-পারমাণবিক অস্ত্র রাষ্ট্র যেটি ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে।
সূত্র: এএফপি
এসজেড