ইউসুফ পাঠান। ভারতীয় ক্রিকেট দলে এক সময়ের তারকা খেলোয়াড় এখন ২২ গজের মাঠ ছেড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন রাজনীতির মাঠ।
স্লগ ওভারে ঝোড়ো ব্যাটিং করে ম্যাচ বাঁচিয়েছেন বহু বার। দেশের হয়ে। আইপিএলে নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলা সেই ইউসুফ পাঠান এবার লোকসভা নির্বাচনে লড়ছেন কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরীর গড় বহরমপুরে।
ইউসুফ লড়ছেন মমতা ব্যাণার্জির তৃণমূলের টিকিটে। পাঁচ বারের এমপির কাছ থেকে কি ম্যাচ ছিনিয়ে আনতে পারবেন ইউসুফ? সেই খেলা দেখার অপেক্ষায় বহরমপুর থেকে গোটা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।
১৯৮২ সালে গুজরাতের বরোদায় জন্ম ইউসুফের। খুব সাধারণ ভাবে মানুষ হয়েছে তিনি এবং ভাই ইরফান। গলিতে ক্রিকেট খেলেই বড় হয়েছেন দুই ভাই।
সেই ইউসুফকে বহরমপুরে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। রাজনীতিতে একেবারে নবীন। ইউসুফকে অধীরের গড়ে হঠাৎ কেন পাঠাল রাজ্যের শাসকদল? তৃণমূলের একটি সূত্রের বক্তব্য, ইউসুফকে প্রার্থী করার নেপথ্যে অন্যতম কারণ হল গোষ্ঠীকোন্দল এড়ানো।
জেলা সভানেত্রীর পদ যাওয়ার পরেই শাওনি সিংহ রায়কে লোকসভা ভোটের প্রার্থী করার দাবি দলের অন্দরে তোলেন তার অনুগামীরা। গতবারের প্রার্থী তথা বর্তমান জেলা সভাপতি অপূর্বও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কারও কারও দাবি, বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ও বহরমপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যের ইউসুফকে নিয়ে এসে প্রার্থী করে তৃণমূল।
আরও একটি কারণ হল সংখ্যালঘু ভোট। তৃণমূলের একটি সূত্রের বক্তব্য, কংগ্রেসের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসাতে পারলে বহরমপুর দখল করা সম্ভব। সেই লক্ষ্যেই ইউসুফকে প্রার্থী করা হয়েছে।
ইউসুফ বলেন, ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে তার সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছি। কলকাতায় খেলতে এসে তার প্রতি মানুষের আবেগ দেখেছি। এখানকার ক্রীড়ামন্ত্রীর (অরূপ বিশ্বাস) সঙ্গে খেলার সূত্রে যোগাযোগ ছিল। বাকিটা ব্যক্তিগত।
২২ গজে তিনি ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত। ‘পিঞ্চ হিটার’ বলা হতো তাকে। রাজনীতির ময়দানে কিন্তু চালিয়ে খেলতে নারাজ ইউসুফ। বড়ঞা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রচার শুরু করেন তিনি। যেখানকার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা এখন দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি। আর দ্বিতীয়টি কান্দি বিধানসভা। যেখানে গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে বেগ পেতে হয়েছে।
কেন এই দুই বিধানসভা দিয়ে প্রচার শুরু করেন ইউসুফ? তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ভোটের ময়দানে আনকোরা হলেও বেশ প্রস্তুতি নিয়েই ‘খেলতে নেমেছেন’ ইউসুফ। তৃণমূল তাকে প্রার্থী করার পর থেকেই নাকি বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিভিন্ন নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে যথেষ্ট চর্চা করেছেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার। আর এই গোটা বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন তার এক বিশ্বস্ত সহযোগীকে। তার পরামর্শেই নাকি বড়ঞা, কান্দি থেকে প্রচার শুরু।