কোরআন ও হাদিসে ক্ষমার গুরুত্ব অত্যন্ত সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল এবং তিনি তাঁর বান্দাদেরও ক্ষমাশীল হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। কোরআনে বলা হয়েছে, “যারা সচ্ছল অবস্থায় এবং অসচ্ছল অবস্থায় ব্যয় করে, যারা ক্রোধ দমন করে এবং মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল; আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।” (সূরা আলে ইমরান: ১৩৪)।
এই আয়াতে স্পষ্টভাবে বোঝানো হয়েছে যে, ক্ষমাশীলতা সৎকর্মশীলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, “তোমরা যদি ক্ষমা করো, দয়া দেখাও এবং ভুলত্রুটি মাফ করো, তবে আল্লাহও ক্ষমাশীল এবং পরম দয়ালু।” (সূরা আত-তাগাবুন: ১৪)।
এখান থেকে বোঝা যায়, ক্ষমা আল্লাহর সিফাত এবং আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকেও এই মহৎ গুণ গ্রহণ করতে উৎসাহিত করেন।
হাদিসেও ক্ষমার গুরুত্ব সুস্পষ্ট। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “ক্ষমা করার ফলে বান্দার মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পায়। আর আল্লাহর জন্য বিনম্রতা অবলম্বন করলে আল্লাহ তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করেন।” (মুসলিম)।
ক্ষমা একজন ব্যক্তিকে আত্মিক প্রশান্তি দেয় এবং সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
একবার এক সাহাবি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, সর্বোত্তম চরিত্র কী? রাসুলুল্লাহ (সা.) উত্তর দেন, “যে তোমার ওপর জুলুম করে, তাকে ক্ষমা করো; যে তোমাকে বঞ্চিত করে, তাকে দাও; এবং যে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে, তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখো।” (আহমদ)।
ক্ষমার মাধ্যমে একজন মানুষ নিজের মধ্যে বিনয় ও সহনশীলতা লালন করতে পারে। এটি শুধু ব্যক্তিগত শান্তি নয়, বরং পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে সৌহার্দ্য বৃদ্ধি করে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে ক্ষমার উদাহরণ অসংখ্য। তায়েফবাসীর নিষ্ঠুর আচরণের পরেও তিনি তাদের জন্য বদদোয়া না করে হেদায়াতের দোয়া করেছিলেন। মক্কা বিজয়ের দিন তিনি তাঁর শত্রুদের ক্ষমা করে দিয়ে মানবতার ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
ক্ষমার এই মহৎ গুণ মানবজীবনে শান্তি, সৌহার্দ্য এবং সফলতার পথ উন্মুক্ত করে। কোরআন ও হাদিসের আলোকে এটি সুস্পষ্ট যে, ক্ষমা শুধু আল্লাহর কাছে প্রিয় নয়, এটি একজন ব্যক্তিকে মহৎ ও মহান চরিত্রের অধিকারী করে তোলে।
thebgbd.com/NA