কুমিল্লায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সংরক্ষণের জন্য স্থায়ী স্থান না পাওয়ায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। বর্তমানে, ইভিএমগুলো বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে অস্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকলেও, স্থায়ী জায়গার অভাবে ইসি একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
সম্প্রতি জানুয়ারি মাসের মাসিক সমন্বয় সভায় ইভিএম সংরক্ষণে নতুন পরিকল্পনার বিষয়টি উত্থাপিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। সভায় ইভিএম সংরক্ষণে মাঠ কার্যালয়ে ওয়্যারহাউজ নির্মাণের বিষয়টি আলোচনা হয়, তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মতামত অনুযায়ী, উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের ভবনগুলোর উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ সম্ভব নয়।
এছাড়া, যেসব উপজেলা ও জেলায় নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ভবন নেই, সেখানে নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসগুলোতে ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের সম্ভাবনা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতামত নেওয়া হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না এবং স্থানীয় নির্বাচনেও এর ব্যবহার নিয়ে সংশয় রয়েছে। যদি কোনো নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না হয়, তবে মেশিনগুলো রক্ষণাবেক্ষণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। বর্তমানে ইভিএম প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে মেশিনগুলোর সংরক্ষণে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ সালে সংসদ নির্বাচনের আগে ইভিএমগুলোতে নানা সমস্যা দেখা দেয়, যার ফলে প্রায় ৪০ হাজার মেশিন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অবশিষ্ট মেশিনগুলোর মধ্যে বেশিরভাগে ত্রুটি ধরা পড়ে, কিন্তু মেরামতের জন্য অর্থের অভাব ছিল।
এছাড়া, অকেজো মেশিনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১২শ কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে নাকচ করা হয়। বর্তমানে, আরও অনেক মেশিন অকেজো হয়ে পড়েছে, যার কারণে রক্ষণাবেক্ষণ আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইভিএমের ব্যবহার শুরু হয়েছিল এক-এগারো সরকারের সময়, এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন কমিশন ইভিএম ব্যবহার করেছে। তবে, ২০১৫ সালে রাজশাহী সিটি নির্বাচনে একটি মেশিন অচল হয়ে যাওয়ার পর রকিব কমিশন সেই মেশিনগুলোর উন্নত সংস্করণ তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। ২০১৮ সালে তারা উন্নত মানের ইভিএম সংগ্রহ করে, তবে পাঁচ বছরের মধ্যেই সেগুলোরও সমস্যা দেখা দেয়।
thebgbd.com/NIT